‘স্বাস্থ্যবি‌ধি ভুলে’ ঈদ কেনাকাটায় মানুষের ঢল, যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই

খুলনার মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবি‌ধি ভু‌লে মানুষ ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সবাই। এছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে খুলনায় বাস চলাচল শুরু হয়েছে। বি‌ভিন্ন এলাকা থে‌কে ক্রেতা আস‌ছেন ঈদের কেনাকাটা কর‌তে। ফলে নগরীর মার্কেটগুলোতে বাড়‌ছে জনসমাগম, উ‌পে‌ক্ষিত থাকছে সামাজিক দূরত্ব।

নগরীর ডাকবাংলা এলাকার মা‌র্কেটগু‌লো শুক্রবার (৭ মে) সকাল ১০টা থে‌কে খোলা শুরু করে। দোকান খোলার পরপরই বাড়তে থা‌কে ক্রেতাদের ভিড়। সময় যত বাড়তে থাকে মা‌র্কেটগু‌লো‌তে ক্রেতা‌দের চাপও বাড়‌তে থা‌কে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে ডাকবাংলো এলাকার যানজট। একদিকে সূর্যের তাপ অন্যদিকে মানুষের বাড়তি চাপে যানজট ছাড়াতে হিম‌শিম খে‌তে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকে।

শনিবার (৮ মে) শহীদ সোহরাওয়ার্দী মা‌র্কেট, এমএমএ রব শ‌পিং কমপ্লেক্স, ডাকবাংলা সুপার মা‌র্কেট, নিক্সন মা‌র্কেট, ক‌বি নজরুল মা‌র্কেট, জব্বার মার্কেট, নান্নু মা‌র্কেট, খুলনা বিপনী বিতান কেন্দ্র, ম‌শিয়ার রহমান মা‌র্কেট, খুলনা শ‌পিং কমপ্লেক্স ও জ‌লিল টাওয়ার মা‌র্কেটে ক্রেতাদের উপ‌চেপড়া ভিড়। মার্কেট ও রাস্তায় যেন তিল ধারনের ঠাই নাই। মুখে অ‌ধিকাং‌শের মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই।

রব শ‌পিং কম‌প্লে‌ক্সের শাড়ি বি‌ক্রেতা শাহীন খান জানান, মা‌র্কেট খোলার পর জনগ‌ণের তেমন একটা সাড়া মে‌লে‌নি। আজ দুইদিন বেচা‌কেনা বেশ ভা‌লো হ‌চ্ছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ক্রেতা‌দের ভিড় তত বাড়‌ছে। ক্রেতা‌দের সামাল দি‌তে রী‌তিম‌তো হিম‌শিম খেতে হচ্ছে।

অপর‌দিকে, নিক্সন মা‌র্কেটের পাঞ্জাবীর দোকানগুলোতে সকাল থে‌কে ক্রেতা‌দের ব্যাপক ভিড় ছিল। সেখা‌নে পা রাখার জায়গা ছিলো না। মা‌র্কেট কর্তৃপক্ষ মা‌ঝেম‌ধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে মাইকিং কর‌লেও কোন দোকানিকে তা মান‌তে দেখা যায়নি। আশে পা‌শের সব মা‌র্কেটের চিত্র একই রকম।

আ‌রিফুল ইসলাম ও তার সহধর্মিণী ডুমুরিয়া থে‌কে ঈদের মা‌র্কেট করতে এসেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মা‌র্কেটে। মার্কেটে ঢুকে তার স্ত্রী অসুস্থ হ‌য়ে প‌ড়েন। তিনি বলেন, গর‌মের কার‌ণে তার স্ত্রী’র এ অবস্থা। শু‌নে‌ছিলেন মা‌র্কেটে স্বাস্থ্যবি‌ধি মানার ক্ষে‌ত্রে কর্তৃপক্ষ য‌থেষ্ট গুরুত্ব দি‌চ্ছে, তবে এখা‌নে এ‌সে বাস্তব চিত্র দে‌খে অবাক হ‌য়ে‌ছেন তিনি।

কয়েকজন ক্রেতা জানান, মার্কেটের দোকান তাড়াতাড়ি বন্ধ হওয়ার কারণে কেনাকাটায় ব্যস্ততা বেড়ে যাচ্ছে। মানুষের ভিড়ে চাইলেও স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, অধিকাংশ বিক্রেতার দাবি যদি দোকান খোলা রাখার সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে ভিড় কমবে, সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হবে, কমবে ক্রেতাদের চাপ।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র (এডিসি মিডিয়া) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, খুলনার ঈদ বাজারে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের নির্দেশনা রয়েছে। আর নির্দেশনা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করছে। যদি কেউ নির্দেশনা লংঘন করে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে তাহলে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।