কুয়াকাটায় দীর্ঘ ১৩ বছর পর ঘরে ফিরলো নিখোঁজ জেলে
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার একযুগ পর নিজ ঘরে ফিরেছেন মিলন আকন (৩০) নামের এক জেলে। ঝড়ের কবলে পড়ে মাছধরা নৌকাসহ সমুদ্রের অতল গহরে সলিল সমাধি হয়েছে নিশ্চিত ছিলেন এ জেলের পরিবারের সদস্যরা।
হঠাৎই বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলে মিলন বাড়ি ফিরে এলে গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য’র সৃষ্টি হয়। তবে সাধারণ মানুষের কাছে এ ঘটনা অব্শ্বিাস্য মনে হলেও ওই জেলের স্বজনদের চোখে বইছে এখন আনন্দাশ্রু। ফলে কৌতুহল নিয়ে ওই জেলেকে এক নজর দেখতে পৌরসভার তিন নং ওয়ার্ডে তার বাড়িতে ভীড় করছেন প্রতিবেশিসহ অসংখ্য মানুষ। এদিকে মিলন মানসিক ভাবে অসুস্থ্য থাকায় দীর্ঘ বছর কোথায় কিভাবে বেঁচে ছিলেন তা জানা সম্ভব হয়নি বলে জানায় পুলিশ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০০৮ সালে মৎস্য শিকারি মিলন তার দুই সহযোগী ফারুক (১৩) ও খোকনসহ (২৫) একটি মাছধরা নৌকা নিয়ে ইলিশ শিকারের জন্য গভীর সমুদ্রে যাত্রা করেন। ওইদিনই নৌকাটি সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন তাঁরা। এরপর থেকেই তাঁদের কোন হদিস পাচ্ছিলেন না স্বজনেরা। আকস্মিক ভাবে দু’দিন আগে (মঙ্গলবার) পার্শ্ববর্তী উপজেলা তালতলীর একটি সড়কে মিলনকে তার এক নিকট আত্মীয় দেখে চিনতে পারেন। পরে বিষয়টি কুয়াকাটায় মিলনের পরিবারকে অবহিত করা হয়। পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে চিহ্নিত করার পর বৃহস্পতিবার মিলনকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
মিলনের বাবা শাহ আলম আকন জানান, দীর্ঘ ১৩ বছর নিখোঁজ থাকার পর আমার ছেলের সন্ধ্যান পেয়ে সনাক্ত করে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। আনন্দে অশ্রুসিক্ত মিলনের মা মিনারা বেগম জানান, আমার ছেলেকে দীর্ঘ বছর পর আমার বুকে ফিরে পেয়েছি। এতে তিনি আল্লাহর দরবারে হাজার শুকরিয়া জানান।
কুয়াকাটা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনির শরীফ জানান, ১৭ বছর বয়সে জেলে মিলন ২০০৮ সালে সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে নিখোঁজ হয়। আজ তাঁর পরিবার তাকে ফিরে পেয়েছে। তবে মিলনের সাথে থাকা অপর নিখোঁজ দুই জেলের এখনো কোন সন্ধান মেলেনি।
মহিপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, নিখোঁজ জেলে মিলন বাড়ি ফিরে এসেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে মানসিক ভাবে অসুস্থ্য থাকায় তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরো জানান, মিলনকে প্রাথমিকভাবে তার বাবা মা শরীরের বিভিন্ন দাগ দেখে সনাক্ত করেছেন। তবে অন্য কেউ যদি মিলনকে তাদের আপনজন হিসেবে দাবী করে সে ক্ষেত্রে ডিএনএ পরীক্ষার বিকল্প নেই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন