দীর্ঘ সেশনজটে বশেমুরবিপ্রবি; অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে ঐক্যমতে নেই শিক্ষকরা
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম। এ বছর তার শিক্ষাজীবন শেষ করে পরিবারের হাল ধরার কথা। অথচ অনার্স তৃতীয় বর্ষেই আটকে রয়েছেন দেড় বছরের বেশি সময় ধরে। যেকোন মূল্যে শিক্ষাজীবন শেষ করতে চান তিনি ও তার সহপাঠীরা।একই অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের হাজারো শিক্ষার্থীর।
করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ বশেমুরবিপ্রবি। অনলাইনে ক্লাস চললেও আশানুরূপ ফল মিলছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। স্মার্ট ডিভাইস না থাকা, মন্থর গতির ইন্টারনেট, অসচ্ছলতাসহ নানা কারণে ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।তবে সফট লোনের মাধ্যমে ডিভাইস সংকটের সমস্যা লাঘব করা গেছে বলে মতামত শিক্ষক – শিক্ষার্থীদের।
এদিকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ২৮ মে অনার্স ও মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা সরাসরি অথবা অনলাইনে গ্রহণের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয় ইউজিসি। কিন্তু ঈদুল আযহার ছুটি শেষ হলেও লকডাউনের কারণে বশেমুরবিপ্রবির প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে পরীক্ষার ব্যপারে শঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সবমিলিয়ে দীর্ঘ সেশনজটের শঙ্কা করছেন তারা।
তবে শিক্ষার্থীদের সেশনজট কমাতে সদিচ্ছার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.কিউ.এম. মাহবুব। তিনি বলেন “আগস্ট মাসেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে মন্ত্রনালয়। এ অবস্থায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরাও এ বিষয়ে ভাবছি।”
তবে অনলাইনে পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষকদের ঐক্যমতে পৌঁছানোর বিকল্প নেই বলে জানিয়ে কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোজাহার আলী বলেন “যদি ৫ জন শিক্ষকও দ্বিমত করেন তবে উপাচার্য স্যারকে উপাচার্য হিসেবে সেটাও কাউন্ট করতে হয়।”
শিক্ষার্থীদের সেশনজট কমাতে অনলাইন পরীক্ষার বিষয়ে যখন শিক্ষকদের ঐক্যমতে পৌঁছানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা,তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রুটিন উপাচার্য ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজাহান ক্যাম্পাস ভিত্তিক একটি অনলাইন পোর্টালে টিকা প্রদানের সুযোগ তৈরি হওয়ায় ও অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ কঠিন দাবি করে টিকা গ্রহণের পর সশরীরে পরীক্ষার বিষয়ে মত দেন।
এই মতামতের ফলে অনলাইনে পরীক্ষার মাধ্যমে সেশনজট নিরসনের বিষয়টি আরো কঠিন হয়ে গেছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি যেভাবেই হোক যেন একটি পদ্ধতি বের করে শিক্ষার্থীদের এই দীর্ঘ সেশনজট থেকে মুক্ত করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজাহানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন এই প্রতিবেদক।
এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপাচার্যের সাথে বৈঠক করবেন বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ কামরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন