জাবিতে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত, বিড়ম্বনায় পরীক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজে বিজ্ঞান শাখার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে দিনাজপুর থেকে পুরান ঢাকায় এসেছিলেন শিক্ষার্থী ওয়াসেদ আলী।

গণপরিবহনের ধর্মঘটের মধ্যে তিনি ট্রেনে করে ঢাকায় আসেন। রোববার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় তাঁর অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করেছে। এখন গ্রামের বাড়ি ফিরতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে এই শিক্ষার্থীকে।

শিক্ষার্থী ওয়াসেদ আলী বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ঢাকায় এসে পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খালাতো ভাইয়ের বাসায় উঠেছিলাম। ভেবেছিলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরব। কিন্তু পরীক্ষা হঠাৎ স্থগিত হওয়ায় এখন বাড়ি ফেরা খুব জরুরি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কীভাবে বাড়ি ফিরব, তা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। বাড়িতে জরুরি কাজ আছে।’

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গণপরিবহন বন্ধের দ্বিতীয় দিনে আজ গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পুরান ঢাকায় ওয়াসেদ আলীর মতো এমন অনেক শিক্ষার্থীকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। কোনোভাবে ঢাকায় এলেও, এখন তাঁদের বাড়ি ফিরতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

শনিবার সকাল থেকে পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাসস্ট্যান্ড ও রাজধানীর কেন্দ্রীয় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাসস্ট্যান্ড থেকে দুপুর পর্যন্ত কোনো গণপরিবহন চলতে দেখা যায়নি। কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ওপর ভরসা করতে হচ্ছে। অনেকেই রাইড শেয়ারিং সেবা নেন। তবে এসব যানবাহনের সংখ্যাও অপ্রতুল। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রাবাড়ি পর্যন্ত স্থানীয় লেগুনা চলতে দেখা গেছে। প্রায় প্রতিটি প্রধান সড়কসহ গলিতেও রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখা গেছে।

সকাল ১০টায় সরকারি সাত কলেজে ভর্তি পরীক্ষা থাকায় শিক্ষার্থীদের রাজধানীর নানা প্রান্ত থেকে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা বদলে বদলে পুরান ঢাকায় আসতে হয়। পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিনটি কলেজ কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়।

কবি নজরুল সরকারি কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শামসুর রহমান বলেন, শ্যামলী থেকে রিকশায় আসতে হয়েছে। গণপরিবহন ধর্মঘট ঢাকায় সকাল সাতটার সময় বেরিয়েছি। অটোরিকশা পেতে এক ঘণ্টার বেশি সময় সড়কে অপেক্ষা করেও কেউ আসতে চায়নি। পরে ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে পুরান ঢাকায় আসতে রাজি হয় একজন চালক। এখন ঘরে ফিরব কীভাবে বুঝতে পারছি না।

এদিকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের আসতে অনেক হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সাধারণ ভাড়া থেকে অন্তত দুই থেকে তিন গুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।