চট্টগ্রামে শতবর্ষী পুকুর ভরাটের অভিযোগ
চট্টগ্রাম নগরীর ৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা নিমতলা এলাকায় শতবর্ষী একটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হবে। পুকুরটি ভরাটের ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন ১৫ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি অভিযোগের অনুলিপি প্রেরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহীর কাছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নগরীর নিমতলা এলাকার হাজী গফুর সওদাগরের বাড়িতে শতবর্ষী পুকুরটির অবস্থান। প্রাচীনকাল থেকে পুকুরটি এলাকার মানুষ নানা কাজে ব্যবহার করে আসছেন। পুকুরের আশপাশে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। লোকজন ঐ পুকুর থেকে পানির চাহিদা পূরণ করতেন। কিন্তু সম্প্রতি একটি প্রভাবশালী মহল পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়েই পুকুরটি ভরাটের কাজ করছেন।
এতে আরো জানা যায়, এতে প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা রয়েছেন ৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা এলাকার কাউন্সিলর ও জুয়েল নামে এক ব্যক্তি। অথচ দেশের প্রচলিত আইনে জলাশয় ভরাট দন্ডনীয় অপরাধ হলেও চসিক বা পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই রাতের অধারে পুকুরটির ভরাট কাজ চলছে।
অভিযোগে জানান, স্থানীয় লোকজন সোচ্চার হলেও প্রভাবশারী মহল ভরাটের কাজ বন্ধ করছেন না। যদিও ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক আদেশে বলা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, জনগণের আশ্রয়স্থল রক্ষা ও অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করতে কোনো অবস্থায় খাল-বিল, পুকুর-নালাসহ প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট করা যাবে না এবং এর গতিপথ পরিবর্তন করা যাবে না।
তবে কোনো ব্যক্তি যদি পুকুর ভরাট করতে চায়, সে ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পুকুর ভরাটের অনুমতি লাগে।
এমনকি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী, যেকোনো ধরনের জলাধার বা পুকুর ভরাট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং ভরাটকারীর বিরুদ্ধে আইনের ৭ ধারায় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও জীববৈচিত্র্য নষ্ট করে পরিবেশগত ক্ষতি ও বিধ্বংসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে শরিফুল ইসলাম, আবুল কাশেম ও সিকদার জানান, জনস্বার্থে পুকুরটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য এক্ষুণি ভরাট কাজ বন্ধ করা জরুরী।
পুকুর ভরাটের বিষয়টি সঠিক কিনা জানতে চাইলে নগরীর ৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা এলাকার কাউন্সিলর মোঃ মোরশেদ আলী বলেন, ‘হাজী গফুর বাড়িতে শতবর্ষী পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে এ রকম অভিযোগ করেনি। খবরটি আমি জানি না। সরকারি আদেশ অমান্য করে পুকুর ভরাট করা আইনত অপরাধ।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মফিদুল আলম বলেন, ‘এ ধরনের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে পরিদর্শন করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন