ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্ষণের অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারে পুলিশের গরিমসি, সড়ক অবরোধ!

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযুক্ত সেই শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের গরিমসির অভিযোগ এনে এবার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।

রবিবার বেলা ১২ টায় উপজেলার বন্দরে সম্মেলিত ছাত্রজোট ও সম্মেলিত অভিভাবক মহলের ব্যানারে ঘন্টাব্যপী আন্দোলন করে তারা। এ সময় সড়ক অবরোধ করে পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযুক্ত সেই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করতে গরিমসির অভিযোগ এনে স্লোগান দেয় তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ বলেন, ঘটনার পর থেকে ধর্ষকের অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছি আমরা। মামলার এতদিনেও কেন পুলিশ ও শিক্ষককে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ তার স্পষ্ট করতে পারেনি পুলিশ। আমরা এর জবাব চাই। তা না হলে আরও দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতে না পঠানো হবে এবং ন্যায় বিচার করা হবে আমাদের আন্দোলন চলবে। এ সময় আরও ৬ ঘন্টা পুলিশ কে সময় দেয় আন্দোলনকারীরা৷

পরে তারা ইউএনও কার্যালয়ে মিছিল নিয়ে যায় এবং সেখানে অবস্থানন নেয়। ইউএনও জুলকার নাইন স্টীভ ওসির বরাতে বলেন আগামি ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামীকে গ্রেপ্তার করা হবে।

জানা যায়, রাণীশংকৈল উপজেলার সহোদর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে পাইলট হাইস্কুলের শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম পৌর শহরের ভান্ডারা মহল্লার ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ঘটনা জানাজানি ওই শিক্ষার্থীর বাবা তৌহিদুলের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তহিদুল ১৫ লক্ষ টাকার যৌতুক চেয়ে বিয়ে করতে চান। বৃষ্টির বাবা এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ লোকজন গত ৩ মার্চ ওই শিক্ষার্থীকে তৌহিদুলের বাড়িতে রেখে আসে। ওই শিক্ষার্থী বিযের দাবিতে সে বাড়িতে অবস্থান নিলে তৌহিদুল বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে পরদিন ৪ মার্চ তড়িঘড়ি করে অন্যত্র বিয়ে করেন। এতে ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ৫ মার্চ তৌহিদুলের বিচার চেয়ে পৌর শহরে মানববন্ধন করে। ওই দিনেই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে রাণীশংকৈল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। সেই সঙ্গে ইউএনও এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) থেকে ওই শিক্ষার্থী বিয়ের দাবিতে ওই শিক্ষকের বাড়িতে অনশন শুরু করেন। এ বিষয়ে তিনি জানান, কম্পিউটার অপারেটর তৌহিদুলের সঙ্গে আমার ৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ক। তিনি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। এখন তিনি আমাকে এড়িয়ে চলছেন। অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছেন। আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য পাঁচ দিন ধরে তৌহিদুলের বাড়ীতে অবস্থান করছি। তৌহিদুলের পরিবার আমাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাকে বিয়ে না করলে আমি এ বাসা থেকে যাবো না। পুলিশ আসামীকে গ্রেপ্তার না করে আমাদের আন্দোলনে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে

এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে রাজপথে নামেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সম্মিলিত ছাত্রজোট। আজও শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। মিছিল শেষে পৌর শহরের শিবদিঘি মোড়ের সড়ক দুই ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রাখে তারা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সহকারী পুলিশ সুপার (রাণীশংকৈল সার্কেল) মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করছে তা খতিয়ে দেখা হবে। আসামী দ্রুত গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।