ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজে নির্যাতিত মেয়ে সুমি অবশেষে ফিরেছে বাবা মায়ের কাছে

টানা ৫টি বছর বাবা মায়ের আদর মমতা থেকে বাঞ্চিত সিলেটের মেয়ে সুমি আক্তার। এ ৫টি বছরে তার জীবনের উপর বয়ে গেছে কত যে নির্যানতন সইতে হয়েছে সে ভূক্তভোগী ছাড়া বলতে পারবে না। দারিদ্রতা কষাঘাতে ও দু’মোটু ভাতের জন্য ঘর ছাড়া হতে হয়ে ছিলো। কিন্তু ঢাকায় গৃহকর্মীদের নির্যাতনের বাস্তবতার বাবা মায়ের কাছে তুলে ধরে সে।

সুত্রে জানা যায়, গৃহকর্মীর কাজ করতে ঢাকায় একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সুমি আক্তারকে। সেখানে অনেক নির্যাতনের শিকার হলে একদিন ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যায় সে। কিন্তু ঠিকানা ভুলে যাওয়ায় সে দিন বাড়ি ফিরতে পারেনি সুমি। অবশেষে আরেক নারীর সহায়তায় প্রায় ৫ বছর পর কিশোরী সুমি ফিরলো মা-বাবার বুকে। রোববার ( ১৩ মার্চ) রাতে মেয়েটি বাড়িতে ফেরে। তাকে আনন্দে আত্মহারা পরিবারের সদস্যসহ স্বজনেরা।

সুমি আক্তার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের টুকেরবাজার গ্রামের আলী আকবরের মেয়ে। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে প্রতিবেশী এক নারীর মাধ্যমে ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজের জন্য গিয়েছিল সুমি আক্তার। তখন তার বয়স ছিল ১১ বছর। ঢাকার ওয়ারী থানার টিকাটুলী খাটখলা এলাকার ফয়েজ আহমদ নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে কাজে যোগ দেয় সুমি। কিছু দিন ওই বাড়িতে কাজ করার পর সে নিখোঁজ হয়।

এ ঘটনায় ঢাকার ওয়ারী থানায় নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সুমির পরিবারের সদস্যরা। সেই সঙ্গে সুমির বাবা আলী আকবর ও মা জোসনা বেগম ঢাকায় মেয়ের সন্ধান করে না পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পর ১২ মার্চ (শনিবার) নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ স্কুল এলাকায় রহিমা বেগম নামে এক নারীর বাড়িতে সন্ধান মেলে সুমির। অবশেষে গত রোববার (১৩ মার্চ) রাতে মেয়েটি তার টুকেরবাজার গ্রামের বাড়িতে ফিরে।

সুমি আক্তার জানায়, পাঁচ বছর আগে পাশের বাড়ির আমিনা নামের এক খালার মাধ্যমে ঢাকায় বাসার কাজের জন্য যায় সে। কয়েক মাস কাজ করার পরে বাসার লোকজন বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একদিন বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। গ্রামের বাড়ির ঠিকানা মনে না থাকায় সে পরিবারের কাছে আর ফিরতে পারেনি। পরে আরেক খালার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের রাহিমা বেগম নামের এক নারীর বাড়িতে সে আশ্র পায়।

রহিমা বেগম কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জের রিপন আহমদ ও মোর্শেদ আলমের মাধ্যমে সুমির পরিবারকে খবর দেন। খবর পেয়ে সুমির মা-–বাবা সিলেট থেকে সেখানে ছুঁটে যান এবং সুমিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তাকে দেখতে এলাকার লোক জন ভিড় করছেন তার বাড়িতে।