ঠাকুরগাঁওয়ে দলীয় কার্যালয়ে তালাবন্ধ করে বিএনপি নেতাকে মারধর

ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ড. টিএম মাহবুবর রহমানকে ঠাকুরগাও জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে বেধড়ক মারপিট করেছে যুবদল কর্মীরা।

সোমবার(২২ মার্চ) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলন প্রস্তুতির আলোচনার কথা বলে মাহবুবর রহমানকে ডেকে নিয়ে যায় জেলা নেতৃবৃন্দ। এসময় কার্যালয়ের মেইন গেটে তালা দিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি নিয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও মহাসচিবের ছোটো ভাই জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের মাঝে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের মাঝে বাকবিতণ্ডার ঘটনাও ঘটে।

মহাসচিবের ছোটো ভাই মির্জা ফয়সালের সাথে বাকবিতণ্ডার জেরেই বেধড়ক মারপিট ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ড.মাহবুব। তিনি বলেন,
সেখানে সম্মেলনের সকল আলোচনা শেষে দলের নেতারা চলে যাওয়ার শুরু করলে আমাকে কৌশলে (কথা আছে বলে) আবার কার্যালয়ে ডেকে নেয়া হয়।
ভিতরে ঢুকার পর কিছু বুঝে উঠার আগেই যুবলদের নেতা জাহিদ সহ আরও কিছু যুবদল কর্মী গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারপিট শুরু করে। সেসময় সেখানে মির্জা ফয়সল আমিন উপস্থিতিত ছিলেন এবং আমাকে মার খেতে দেখে মুচকি হাসছিলেন।

একপর্যায়ে ড.মাহবুবের চিৎকারে জেলা বিএনপি’র সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি মোহাম্মদ আলম,সহ সভাপতি ওবাইদুল্লাহ মাসুদ, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাড.সৈয়দ আলম তাকে তাৎক্ষনিক উদ্ধার করে ঠাকুরগাও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন সকালে তাঁকে বালিয়াডাঙ্গীস্থ নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।

ড.মাহবুব অভিযোগ করে বলেন, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের নির্দেশেই এই ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় মুখচেনা কয়েকজন নেতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। তাঁরাও উৎসাহ যুগিয়েছে।

ঘটনার দায় সরাসরি অস্বীকার করে অভিযুক্ত মির্জা ফয়সাল আমিন বলেন, আমি ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলামনা। এসবের কিছুই জানিনা। পরে শুনেছি।

তবে ঘটনার সময় মির্জা ফয়সালের উপস্থিতির সত্যতা নিশ্চিত করে প্রত্যক্ষদর্শী জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ওবাইদুল্লাহ মাসুদ জানান, যেহেতু সেখানে একটা সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো সেময় জেলা বিএনপি’র নেতা মোহাম্মদ আলম,সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরী,আনছারুল হক ও জাফরুল্লাহ সহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ঠাকুরগাঁও যুবদলের সভাপতি আবুনুর বলেন, ঘটনা স্থলে আমি ছিলামনা। ঘটনা ঘটেছে এটা জেনেছি। তবে কে বা কারা ঘটিয়েছে তা ঠিক জানিনা। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিষয়ে রুহিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি আনছারুল হক বলেন,নিজ দলীয় কার্যালয়টিতে যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে কোথায় আমরা নিরাপদ?

জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি মোহাম্মদ আলম বলেন, যখন প্রচন্ড মারপিট হচ্ছিল আমি দৌঁড়ে গিয়ে তাঁকে বাঁচিয়েছি। মাহবুবের গাঁয়ের ঝড়া রক্তে আমার পান্জাবি ভিজে গিয়েছিল। তাঁকে মেরে ফেলার মতো পরিস্থিতি আমি দেখেছি।

জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক জাফরুল্লাহ জানান,এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। দলের মহাসচিব বিষয়টি জেনেছেন।তিনি শক্তহাতে বিষয়টি দেখবেন বলে জানা গেছে।

ঠাকুরগাঁও জেলার বিএনপি’র সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন,এটি মেনে নেওয়া খুব কস্টকর। যুবদলের নেতাকর্মীরা মূলদলের নেতার গায়ে হাত দেয় কিভাব। তাও নিজ দলীয় কার্যালয়ে। কাজটি মোটেও ঠিক হয়নি। নিন্দা জানাবার ভাষা নেই আমাদের। এমন ঘটনার জন্য দল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকা থাকে।