স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সংরক্ষিত হয়নি গণকবর
দিনাজপুরের খানসামায় অস্থায়ী বাঁশের বেড়ায় শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ!
স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলায় সংরক্ষণ করা হয়নি গণকবর। ফলে অস্থায়ী বাঁশের বেড়ায় শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছে শহীদ পরিবার।
তবে গত ৮ বছরের ধারাবাহিকতায় খানসামা ডিগ্রি কলেজের আয়োজনে ইছামতী নদীর তীরে অসংরক্ষিত বধ্যভূমিতে গণহত্যা দিবসে শহীদের স্মরণ করা হয়।
এর আলোকে অস্থায়ী বাঁশের বেড়ার স্মৃতিস্তম্ভে খানসামা ডিগ্রি কলেজ ও উপজেলা ছাত্রলীগ শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করে।
গণকবরের প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, অমানবিক ভাবে নির্যাতন করে অমিয় বাবুসহ কয়েকজনকে এখানে হত্যা করা হয়েছে। সেই স্মৃতি আজও আমাদের চোখে ভাসে কিন্তু এই স্মৃতিময় স্থানে সংরক্ষণে কোন উদ্যোগ নেই। যা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। তা না হলে কবরগুলো নদীতে বিলিন হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার সূর্বণজয়ন্তীতেও গণকবরের তালিকা ও সংরক্ষণ, শহীদ পরিবারের তালিকা তৈরী ও রাজাকারের তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সংগ্রাম কমিটির সদস্য ও মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সদস্য বাবু অমিয় কুমার গুহকে ১৯৭১ সালের ১ জুন গভীর রাতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাড.জহির উদ্দিনের বাড়ি থেকে আটক করে পাকিস্তানি দালালরা ২জুন খানসামা থানায় বন্দি করে রাখে। তার পরের দিন পাকবাহিনীকে খবর দিয়ে রাজাকাররা বাবু অমিয় কুমার গুহকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এরপরে সাইকেলে রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে পার্শ্ববর্তী নীলফামারী ও খানসামা উপজেলার সংযোগস্থল পুলহাট নামক স্থানে ইছামতী নদীর তীরে গুলি করে ও বেয়োনেট দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে রেখে যায়। একই স্থানে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া টেডি ডাক্তার ও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী খ্ট্টুু মিয়াকে হত্যা করে পাকবাহিনী।
পরে স্থানীয় তরনী কান্ত, নজরুল ইসলামসহ অনেকে নদী থেকে লাশ তুলে কবর দেন। কিন্তু স্বাধীনতা ও শহীদদের মৃত্যুর ৫০ বছরেও এসব পরিবার শহীদ পরিবার হিসেবে সরকারী ভাবে স্বীকৃতি পায় নাই। শুধু অমিয় কুমার গুহয়ের নামে একটি রাস্তার নামকরণ ও উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিভিন্ন দিবসে খেলাধুলার নামকরণ ছাড়া আজ পর্যন্ত কোন সাহায্য-সহানভূতি পায়নি পরিবারগুলো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন