কলাপাড়ায় মাদ্রাসা শিক্ষকের অমানুসিক নির্যাতনে হাসপাতালে শিক্ষার্থী
বাবা কাঁদিস না,হুজুর যেখানে যেখানে মেরেছে সেই যায়গা বেহেস্তে যাবে। একটু যন্ত্রনা সহ্য কর আমি হুজুরকে ফোন দিচ্ছি,তিনি আসলে তোর সব ব্যথা ঠিক হয়ে যাবে। এভাবেই শান্তনা দিচ্ছিলাম। কিন্তু রাত গভীর হলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে ১১ পাড়ার হাফেজ ১৩ বছর বয়সী আমার কিশোর ছেলে সাইফুল ইসলাম। পরে ওই রাতেই নির্যাতনকারী শিক্ষক বাড়িতে এসে আহত সাইফুলকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে কৌশলে আমার ছেলেকে ডাইরিয়ার রোগী হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি করান তিনি, এতে সাইফুল আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। অশ্রæসিক্ত চোখ আর ভেজা কন্ঠে এভাবেই নিজ সন্তানের কথা জানাচ্ছিলেন হাসপাতালে শয্যাসায়ী সাইফুলের মা ধর্মভীরু মাজেদা বেগম।
উপজেলার লতাচাপলী ইউপির ডঙ্কুপাড়া গ্রামের সোবাহান মুসুল্লির পুত্র সাইফুল ইসলাম রসুলপুর কামাল উদ্দিন হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। গত (৩১ মার্চ) বৃহষ্পতিবার সকালে মাদ্রাসার প্রধান গেট দিয়ে না এসে বেড়ার উপর দিয়ে মাদ্রসার অভ্যন্তরে প্রবেশ করায় ক্ষিপ্ত হন শিক্ষক জামাল উদ্দিন। পরে সাইফুলকে ডেকে নিয়ে টুনি (বাঁশের লাঠি) দিয়ে বেধরক নির্যাতন চালান তিনি। অমানুসিক নির্যাতনের ফলে ওই শিক্ষার্থীর শরীরে জ্বর আসলে বাড়িতে ফিরে গিয়ে মায়ের কাছে সবকিছু জানায় সাইফুল। কিন্তু ধর্মভীরু মা হুজুরকে ফোন দিয়ে জানানোর পর বাড়িতেই গ্রাম্য চিকিৎসক দ্বারা সাইফুলকে চিকিৎসা দেন। পরে রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থী আরো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষক জামাল সাইফুলকে কুয়াকাটা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসক সাইফুলকে দ্রæত কলাপাড়া হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক সেখানে সাইফুলকে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত রোগী হিসেবে ভর্তি করে সটকে পড়েন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীর মায়ের। বর্তমানে এই কিশোর চিকিৎসাধীন অবস্থায় যন্ত্রায় কাতরাচ্ছে।
এমনকি কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে সাইফুলের। সাইফুল জানান, শধুমাত্র বেড়ার উপর দিয়ে আসায় হুজুর আমাকে লাঠি দিয়ে অন্তত ২৫টি আঘাত করেছেন। আমার পিঠে এবং দুপাশের খাচায় প্রচন্ড ব্যাথা,দাড়াতে পারছি না। সাইফুলের অভিযোগ, প্রায় সময়ই ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম নির্যাতন করেন শিক্ষক জামাল। এদিকে সাইফুলের পিতা সোবাহান মুসুল্লি জানান, ছেলেটাকে ডাক্তার পরীক্ষা নিরিক্ষা দিয়েছে যে কোথাও হার ভেঙ্গেছে কিনা। এছাড়া নির্যাতনকারী শিক্ষক জামালের শশুর আবুল কালাম আমাদের বাড়িতে গিয়ে কোন ধরনের মামলা না করতে বলে এসছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক জামাল হোসেন জানান, বেড়ার উপর দিয়ে আসতে নিষেধ করছি। শোনে নায়, একারনে টুনি দিয়ে পিটাইছি। ডাক্তারও দেখাইতেছি। মহিপুর থানার ওসি খন্দকার আবুল খায়ের জানান, এবিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন