বিএসএফ-বিজিবির উদ্যোগে ভারতে প্রয়াত মাকে শেষবারের মতো দেখল দুই বাংলাদেশি কন্যা

ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর উদ্যোগে ভারতে প্রয়াত মায়ের শেষ দেখা পেল বাংলাদেশে অবস্থান করা তার দুই মেয়ে।

গত ৩ এপ্রিল একটি সংবেদনশীল বিষয় প্রকাশ্যে আসে।

জানা যায়, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মাটিয়ারির বাসিন্দা সুকুর মন্ডলের মা রোহতন বিবি প্রয়াত হন। কিন্তু সুকুরের দুই বোন থাকেন বাংলাদেশে।

তাদের দুই বোনের কাছেই মায়ের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশের বাসিন্দা হওয়ার কারণে তারা ভারতে আসতে পারছিলেন না। এরপরই স্থানীয় বানপুর এলাকায় বিএসএফ’এর ৫৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সীমা চৌকি কোম্পানি কমান্ডারকে বিষয়টি জানান সুকুর মন্ডল। বিএসএফকে তিনি অনুরোধ করেছিলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত তার বোনেরা তাদের মৃত মাকে একবার শেষ দেখা দেখতে চায়।

বিএসএফ যদি এই ব্যবস্থা করে দিতে পারে তবে তারা খুব খুশি হবে।

সুকুরের এই আবেদন শুনেই বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার বিষয়টি নিয়ে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি)-এর সাথে যোগাযোগ করে। বিএসএফের তরফে বিজিবিকে অনুরোধ জানানো হয়, সেদেশে অবস্থানরত দুই কন্যাকে নিয়ে এসে তাদের প্রয়াত মায়ের সাথে সাক্ষাত করানো যায় কি না। বিএসএফ’এর অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিজিবিও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা বিবেচনা করে এগিয়ে যায়।

এরপর উভয় দেশের ‘সীমান্ত রক্ষী বাহিনী’ পারস্পরিক সহযোগিতার কথা মাথায় রেখে মানবতাকে সর্বাগ্রে রেখে বাংলাদেশে অবস্থানরত দুই কন্যাকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে জিরো লাইনে প্রয়াত মাকে শেষ বারের মতো দেখার ব্যবস্থা করে।

রবিবার বিকালের দিকে যখন উভয় কন্যাই তাদের প্রয়াত মা রোহতন বিবিকে শেষ বারের মতো দেখেন তখন সেখানকার পরিবেশ আবেগঘন হয়ে ওঠে। দুই কন্যা ও পুত্র সুকুর মন্ডলসহ সকলেই বিএসএফ’এর এই উদ্যোগের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

দুই কন্যার বক্তব্য, ‘আপনাদের মানবিকতার কারণে আমরা মায়ের শেষ দেখা পেয়েছি। ’

এ ব্যাপারে সোমবার বিএসএফ’এর দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগ কর্মকর্তা এবং ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার সুরজিৎ সিং গুলেরিয়া জানান, ‘আন্তর্জাতিক সীমান্তের পবিত্রতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সীমান্ত বাসীর মানসিক ও সামাজিক মূল্যবোধের কথা মাথায় রেখে বিএসএফ তাদের দায়িত্ব পালন করে।

এই ধারাবাহিকতায় ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিএসএফ-এর সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার ফের একবার মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ’