খাগড়াছড়িতে অপহরণের ১১দিনেও খোঁজ মেলেনি ব্যবসায়ীর

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় গত ৫ই এপ্রিল রাতে মানিকছড়ি উপজেলার যোগ্যাছোলা ইউপির খাড়িছড়া এলাকা থেকে অপহৃত হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো: আবদুল কাদের(৪৫)। দীর্ঘ ১১দিন পেরিয়ে গেলেও তাকে এখনো মুক্তি দেওয়া হয়নি। ফলে শনিবার(১৬ই এপ্রিল) সকালে ওই এলাকার উত্তেজিত উগ্র বাঙ্গালীরা এলাকা স্থায়ী অবরোধের হুমকি দেয়। এতে আতংকিত ছড়িয়ে পড়ে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর মাঝে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী জনপদে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

পুলিশ ও অপহৃত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খাড়িছড়া এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো” আবদুল কাদের গত ৫ই এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টায় খাড়িছড়া দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহৃত করা হয়। রাতে কাদের বাড়ি না ফিরায় সকালে তাকে খুঁজতে গিয়ে মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল, দড়ি, কসটেপসহ অপহরণের শিকার হওয়ার কিছু আলামত দেখতে পেয়ে তা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে অবহিত করলে সেটি পুলিশ জব্দ করেন।

পরবর্তীতে কাদেরকে মুক্তি দিতে পরিবারের কাছে সশস্ত্র গ্রুপ ইউপিডিএফ পরিচয়ে প্রথমে ৫০লাখ, পরে ৩০লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। এক পর্যায়ে এসে আরও কম মুক্তিপণে নমনীয় হয় অপহরণকারী চক্র। অপহৃতের পরিবারও প্রস্তুুতি নেয় মুক্তিপণ বিনিময় করার। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে আবারও অপহরণকারীদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে অপহৃতের পরিবার জনপদে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়তে থাকে।

মুক্তিপণে কাদেরকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টার বিষয়ে অপহৃতের পরিবারের কেউ মূখ খুলছে না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপহরণ পরিচয়কারী ও অপহৃতের পরিবারে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনায় সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে এমনটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এদিকে কাদের অপহরণের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও এলাকাবাসীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করলেও দীর্ঘ ১১দিনেও অপহৃতের সন্ধান কিংবা এ নিয়ে কোন অগ্রগতি নেই। ফলে অপহৃতের পরিবার জনপদে ক্ষোভ ও হতাশার চিহ্ন দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।

শনিবার(১৬ই এপ্রিল) সকালে ছদুরখীল এলাকায় কিছু বাঙ্গালী যুবক বাজারে এসে কাদের মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত পাহাড়ী জনগোষ্ঠীকে হাট-বাজারে আসতে নিষেধ করেন। এতে মূহুর্তে পাহাড়ীরা আতংকিত হয়ে পড়ে।

বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসলে দ্রæত ঘটনাস্থলে ছুঁটে যায় থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহনূর আলম ও ইউপি চেয়ারম্যান ক্যয়জরী মহাজন। তাঁরা পাহাড়ী-বাঙ্গালীর উদ্দেশ্য বলেন, কারও উস্কানিমূলক কথা কর্ণপাত না করে শান্ত থেকে অপহৃতকে উদ্ধারে কোন তথ্য জানা থাকলে সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এলাকায় নিরাপত্তার বাহিনী জোরদার করেন।