বাংলাদেশে ইউরিয়া সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে : শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেছেন, শিল্প মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরিয়া সার বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) এর সার কারখানাগুলোর মাধ্যমে উৎপাদন এবং বিদেশ থেকে আমদানি করে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে ইউরিয়া সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নির্মাণ সামগ্রী সিমেন্ট ও রডের দাম বেড়েছে। জনগণের যে কষ্ট হচ্ছে সেটা সরকার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেন। আমরা ব্যবসায়িদের নীতিমালার মধ্যে আনতে পারিনি। আমরা চেষ্টা করছি সার্বিকভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য। মানুষের যে ভোগান্তি হচ্ছে তা কমানোর জন্য চেষ্টা করছি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যেখানে অনেক কষ্ট লাঘব হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, করোনার পরে বিশ্বের যে সার্বিক অবস্থা তা হঠাৎ করে হয়নি। করোনার পর আবার ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ এতে প্রভাব ফেলেছে। আমরা একটা গ্লোবাল ফ্যামিলিতে বসবাস করি। আমরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল।
উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, এদেশের জনগণ থাকবে, ততদিনই বঙ্গবন্ধু সকলের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর নীতি, আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের বিস্ময়। দেশরত্ন শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনাসহ সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ২০৪১ সালের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে।
এর আগে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পরে তারা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এসময় শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান শাহ্ মো. ইমদাদুল হক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূরুল আলম, জনেন্দ্রনাথ সরকার, যুগ্মসচিব মো. আব্দুল ওয়াহেদ, জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানাসহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ায় বিসিআইসি কতৃক সারের বাফার গোডাউন নির্মানের ফলক উম্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে ইউরিয়া সারের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশে বর্তমানে বছরে কমপক্ষে ২৫ লাখ মেট্রিকটন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে। উক্ত সারের ন্যূনতম ৬০% থেকে ৭০% বিদেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়। আমদানিকৃত সার দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত বিএডিসি এর ২৫টি বাফার গুদামের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এছাড়া, নিরাপদ মুজদ নিশ্চিতকরণে ২৫ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের অতিরিক্ত হিসেবে আরো ৫ লাখ মেট্রিক টন সার বাফার গোডাউনসমূহে মজুদ রাখা প্রয়োজন। বর্তমানে কারখানা ও সকল বাফার গোডাউনের ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩ লাখ মেট্রিক টন। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় দু’টি পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩টি ও ৩৪টি করে মোট ৪৭টি বাফার গোডাউন নির্মাণ করা হচ্ছে। সবগুলো বাফার গোডাউন নির্মাণ সম্পন্ন হলে প্রতিটিতে ১০,০০০ (দশ হাজার) মে. টন করে মোট প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন সার মজুদ রাখা সম্ভব হবে বলে আশা করি।
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার গুদাম নির্মাণ কাজের ভৌত অগ্রগতি প্রায় শতকরা ৪০ ভাগ। প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করার জন্য মন্ত্রী নির্দেশ প্রদান করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন