ইরানে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ, পুলিশের গুলি

ইরানে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের দমাতে বিভিন্ন শহরে গুলি ছুড়েছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী।

মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে চলমান বিক্ষোভে অন্তত ২০১ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে একটি মানবাধিকার সংস্থা। যাদের মধ্যে ২৮ শিশুও রয়েছে। এ ছাড়া আরও শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করে দেশটির কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে।

তেহরানের নারী শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন। তাঁরা স্বৈরাচারের মৃত্যু চেয়ে স্লোগান দেয়। মানবাধিবার সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, কমপক্ষে ২৮ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বাধ্যতামূলক হিজাব পরার আইন উপেক্ষা করে রাজধানী তেহরানে বিক্ষোভ করেছেন শত শত নারী।

এ সময় তেহরানের রাস্তায় এক নারী শিক্ষার্থীকে ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ স্লোগান দিতে শোনা যায়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এই ভিডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসিও তেহরানে বিক্ষোভের কথা জানিয়েছে। এ বিক্ষোভের ইরানি তরুণরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তেহরানভিক্তিক সাংবাদিকরা।

অনেক বিক্ষোভকারীকে আটক করে প্রাপ্তবয়স্কদের কারাগারে রাখা হয়েছে। কুর্দিস্তান ছাড়াও ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের জাহেদান এলাকাতেও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নরওয়েভিত্তিক দুটি মানবাধিকার সংস্থা সামাজিক মাধ্যমে বিক্ষোভের ভিডিও শেয়ার করেছে। এতে দেখা যায়, মাহসা আমিনির জন্মস্থান সাকেজ ছাড়াও ইস্পাহান ও কারাজ শহরে বুধবার বিক্ষোভকারীরা হিজাববিরোধী আন্দোলন করছেন।

কুর্দিশ মানবাধিকার সংস্থা হেনগাওয়ের মতে, সাকেজ শহরে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া খেয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে গেছে।

সরকার ও হিজাববিরোধী বিক্ষোভে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। পরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়।

এদিকে বিক্ষোভের মূল হোতাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান প্রধান গোলাম হোসেইন মোহশেনি ইজেই।

এছাড়া, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি আবারও দেশজুড়ে চলমান আন্দোলনে ‘শত্রুরা’ ইন্ধন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।

হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিক পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কোমায় চলে যান মাহসা। ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

পুলিশি নির্যাতনে আমিনির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এ ঘটনার পর ইরানে গত তিন বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ শুরু করেছেন দেশটির তরুণ-তরুণী, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও।