যশোরের মণিরামপুরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পূর্বাভাসে, চিন্তায় কপালে ভাঁজ আমন চাষিদের
প্রয়োজনের সময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টি মেলেনি। ফলে, আমন ধানের চাষ শুরু করতে দেরি হয়েছে যশোরের মণিরামপুর এলাকার চাষিদের। এখন বেশির ভাগ জমিতেই আমন ধানের শিষ উঠেছে, ফুল ফুটছে এবং শিষ উঠা ধান পুষ্ট হচ্ছে।
এই মুহুর্তে যদি ক্ষতি হয় এবং ধান ঘরে তুলতে পারবো কিনা এমন চিন্তায় চাষিদের কপালে ভাঁজ পড়ছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর আশঙ্কায়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত আনবে খুলনা বিভাগে। এই দুর্যোগের পূর্বাভাসে চরম ভয় ও আতঙ্কে আছে মণিরামপুর অঞ্চলের আমন চাষিরা। মণিরামপুর অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংএ আমন ধানের কতটা ক্ষতি হবে, কি আদেও হবেনা এসব আলোচনা-সমালোচনাও করছেন চাষিরা।
চাষিরা জানিয়েছেন, এবার বৃষ্টির অভাব থাকায় দেরিতে আমন ধান রোপনের শেষ কাজ করতে হয়েছে। তাই চাষিদের গোলায় ধান উঠতেও দেরি হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ ভরা আমন গাছ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ধান গাছের আগাই ধানের শিষ উঠেছে, ফুল ধরেছে। আবার কোথাও দানা পুষ্ট হচ্ছে। মাঠের পর মাঠ সবুজ আর সবুজ।
চাষিরা বলেছেন, আর মাস খানেকের মধ্যে এ অঞ্চলে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হওয়ার কথা।
মণিরামপুরের হানুয়ার গ্রামের চাষি রহমত আলী বলেন, দেরিতে চাষ শুরু হলেও ভালো আবহাওয়ায় থাকায়, ধান গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়েছে। ধানের রোগ-বালাইয়েরও তেমন সমস্যা নেই। তবে ঝড় এলে ধানের শীষ থেকে দানা ঝরে যাবে এবং গাছ ভেঙ্গে পড়ে শুয়ে যাবে। খুব বড় ক্ষতি হতে পারে।
চাষি মো. মফিজুর রহমান জানান, নিম্নচাপের কারণে শুধু বৃষ্টি হলে কিছুটা সামলানো যাবে। কিন্তু ঝড় হলে বিপদের শেষ থাকবে না। শুধু ধান না অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এখন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের ভরা মৌসুম।
এদিকে, বেশি চিন্তায় রয়েছে বর্গা চাষিরা। তারা অন্যের জমি ধার নিয়ে তাতে ধান চাষ করে। চাষ শেষে সমান সমান ভাগ দিতে হয় জমির মালিককে। তারা বলছেন, যদি ঘূর্ণিঝড় হয়, তাহলে ক্ষতি নিশ্চিত হবেই। ধার-দেনা হয়ে চাষ করি। ঝড়ে ক্ষতি হলে এমন সমস্যায় পড়তে হবে বলার মতো না।
হানুয়ার গ্রামের বর্গাচাষি ফজলুর রহমান বলেন, দেরিতে ধান রোপন করায় ফলন অনেকটা কম হবে এমনটায় দেখা যাচ্ছে। তার উপরে যদি ঝড় হয়, সব শেষ হয়ে যাবে!
চাষি জুলফিকার আলী জানান, গত ইরি-বোরো আবাদে মণিরামপুর অঞ্চলে শত শত বিঘা কেটে রাখা ধান শিলাবৃষ্টিতে মাঠেই নষ্ট হয়েছিলো। সেই লোকসান এখনো কেটে উঠতে পারিনি চাষিরা। এখন ঝড়-বৃষ্টি হলে আমন ধানও নষ্ট হবে। ক্ষতির পরে ক্ষতি হলে চরম সঙ্কটে পড়তে হবে এবং না খেয়ে মরতে হবে।
চাষিরা বলছেন, ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর আবহাওয়ার পূর্বাভাস শুনলেই পরান কেপে উঠছে। চিন্তা বেড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, আমরা কৃষকের পাশে আছি। পরিবেশ বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন