বাইডেন-দুদা ফোনালাপ, জরুরি বৈঠক ডেকেছে ন্যাটো ও জি-৭

পোল্যান্ড সীমান্তে কথিত রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে ‘পরবর্তী করণীয়’ ঠিক করতে ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা। এ ঘটনায় জরুরি বৈঠক ডেকেছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো এবং শিল্পোন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর জোট জি-৭। খবর এএফপি ও বিবিসির।

গতকাল মঙ্গলবার ইউক্রেন সীমান্তবর্তী পোল্যান্ডের একটি গ্রামে বিস্ফোরণে দুজন নিহত হন। রাশিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে ন্যাটো মিত্ররা।

গতকাল হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এ ঘটনায় পরবর্তী করণীয় নিয়ে পোলিশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বাইডেন। দুজনে বলেন, ‘তদন্ত এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে তাঁদের এবং তাঁদের টিমগুলোর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলা উচিত।’

এদিকে পোল্যান্ডে প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনায় আজ বুধবার জোটের সদস্যদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করবেন ন্যাটোপ্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ। মঙ্গলবার ন্যাটোর মুখপাত্র ওয়ানা লুঙ্গেসকু এসব কথা জানান। তিনি বলেন, মর্মান্তিক এ ঘটনার বিষয়ে আলোচনা করতে ন্যাটো সদস্যদেশগুলোর দূতদের জরুরি এক সভায় সভাপতিত্ব করবেন মহাসচিব স্টলটেনবার্গ।

পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় আজ জরুরি বৈঠক ডেকেছে শিল্পোন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর জোট জি-৭। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো এ কথা জানিয়েছে। এই জোটের দেশগুলো হলো—কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
সীমান্তে বিস্ফোরণের বিষয়ে এক বিবৃতিতে পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে দেশটির ভূখণ্ডে ‘রাশিয়ার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র’ এসে পড়ে। এতে সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে দুজন নিহত হন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লুকাস জাসিনা বলেছেন, এ ঘটনায় ‘অনতিবিলম্বে বিস্তারিত ব্যাখ্যা’ দিতে পোল্যান্ডে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে।

তবে বিবৃতিতে কোন দেশ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই দেশের বাহিনীই রাশিয়ার তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করে আসছে।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট দুদা বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য কারা দায়ী সে বিষয়ে ‘অকাট্য কোনো তথ্য-প্রমাণ’ নেই। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কারা ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করেছে, সে বিষয়ে এ মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনো অকাট্য তথ্য-প্রমাণ নেই।… এটি সম্ভবত রাশিয়ার তৈরি একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। তবে বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন।’
তবে পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে রাশিয়া। বিষয়টিকে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেওয়ার ‘উসকানি’ হিসেবে অভিহিত করেছে মস্কো।
অনলাইনে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘পোলিশ গণমাধ্যম এবং দেশটির কর্মকর্তারা প্রজেওডোতে রুশ রকেট দ্বারা কথিত ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উসকানি দিচ্ছে। রুশ বাহিনী ইউক্রেন-পোলিশ সীমান্তে কোনো ধরনের হামলা চালায়নি।

এর আগে মঙ্গলবার দিনভর ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এ দিনের হামলাকে প্রায় ৯ মাসের রুশ আগ্রাসনের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বলে জানিয়েছে কিয়েভ। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র পশ্চিমাঞ্চলীয় লিভিভ শহরে আঘাত হেনেছে। শহরটির দূরত্ব পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে ৮০ কিলোমিটারেরও কম।