পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অসৎ উদ্দেশ্যে গম মজুদ রাখার দায়ে ইউপি সদস্য শ্রীঘরে
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) পঞ্চগড়ের ১০ বস্তা গম অবৈধভাবে বাড়িতে মওজুদ করার দায়ে ফিরোজ আলী(৫২) কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ফিরোজ আলী উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের গনিপাড়া গ্রামের মৃত রফিজ উদ্দিনের ছেলে।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে সহকারী ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত গুদাম রক্ষক এবং সিনিয়র সহকারী পরিচালক(বীজ বিপনন) মোঃ রাশেদুজ্জামান বাদী হয়ে একজনকে আসামী করে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। যার থানার মামলা নং-০৫।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ আলী অসৎ উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে উচ্চ ফলনশীল দশ বস্তা বারিগমের বীজ সংরক্ষন করে রাখেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও বিজ্ঞ এ্যাজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহার নির্দেশে ও উপস্থিত সাক্ষীদের উপস্থিতিতে প্রথমে ফিরোজ আলীর বসতবাড়ীর দক্ষিণ ভিটার আধাপাকা দোচালা টিনের উত্তর দুয়ারী রান্নাঘরের ভিতর থেকে ৭বস্তা এবং ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বশিরুল আলমের বসতবাড়ীর সামনে পাকা রাস্তায় বশিরুল আলম কর্তৃক উদ্ধারকৃত ৩ বস্তা গমের বীজসহ সর্বসাকুল্যে ১০বস্তা গম উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। জানা যায়, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(১) ও ২৫-ডি ধারায় মামলা অন্তর্ভুক্ত করে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফিরোজের ছেলে আরিফ হোসেন ঠাকুরগাঁও বিএডিসি অফিসে চাকরি করেন। তার বাড়ি থেকে এলাকায় গম বিক্রির গুঞ্জন শুরু হলে বিষয়টি অত্র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের কানে যায়। পরে ঘটনার দিন সকালে ফিরোজের বাড়ি থেকে যখন কোনো এক প্রতিবেশী ভ্যানযোগে গম ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ইউপি সদস্য প্রথমে পাকা রাস্তায় তিনটি বস্তা উদ্ধার করেন। পরে বাসায় আরও সাতটি বস্তা দেখতে পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করেন। এরপর বিকাল ৩টার দিকে উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, ফিরোজের দেবনগড় বাজারে ছোট খাটো একটি দোকান রয়েছে। সে ইদানিং দোকানে গম বিক্রির পাশাপাশি বাড়িতে প্রতিবেশীদের নিকট গম বিক্রি করে আসছেন।
ফিরোজের পরিবার জানান, তাদের নিজস্ব জমিতে গম ফেলানোর জন্য এই সব গমের বস্তা ক্রয় করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আলম জানান, ফিরোজের বাড়ি থেকে গম বিক্রি হচ্ছে এর সঙ্গে তিনি জড়িত রয়েছেন কিনা এলাকাবাসী বলাবলি শুরু করেন। গম বিক্রির এই বিষয়টি তার কানে গেলে, তিনি প্রমাণ সরুপ এই গম গুলো উদ্ধার করেন। তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত থেকে সকাল পর্যন্ত প্রায় ১’শ থেকে দেড়’শ বস্তা গম বিক্রি করেছেন।
উল্লেখ্য যে, শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের গনিপাড়া গ্রামের মৃত রফিজ উদ্দিনের ছেলে ফিরোজ আলীর বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ছলেমান আলী , কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ জীবন ইসলাম, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম এবং তেঁতুলিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ ও আমানুল্লাহসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন