চাঁদপুরের সিএসডি গুদামের ২০ টন পাচারের চাল হাজীগঞ্জে জব্দ
চাঁদপুর জেলা খাদ্য গুদাম (সিএসডি) এর ২০ মেট্রিক টন চাল পাচারের সময় হাজীগঞ্জে গাড়িসহ জব্দের ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
রোববার (১৯ মার্চ) উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় এই তদন্ত টিম গঠন করে জেলা প্রশাসক। এর আগে ১৮ মার্চ শনিবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের নির্দেশে চালসহ গাড়িটি চাঁদপুরে নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয়রা জানান, সিএসডি গোডাউন থেকে পাচার হওয়া চাল জব্দের পর রাজনৈতিক পদ-পদবী পরিচয় দিয়ে তা ছাড়িয়ে নিতে ব্যাপক তদবীর চালানো হয়। আর এই তদবীর কারীরাই জনগণের হক বঞ্চিত করে এভাবেই নানাভাবে চাল পাচারে সক্রিয়। যদিও তদবীরকারীদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা নিধন বন্ধে চাঁদপুরের জেলেদের জন্য যে পরিমাণ চাল বরাদ্দ দেয়া হয় সেই চালগুলো কিছু অংশ চুরি করে দালালদের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছিলো। আর জব্দকৃত চালগুলো চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নং লক্ষ্যাপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ক্রয় করে দালাল চক্র পাচার করার চেষ্টা চালাচ্ছিলো। যদিও প্রশাসনের চৌকসতায় শেষ রক্ষা হয়নি।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, শনিবার বিকেলে ঢাকা মেট্রো-ট-১১-৫৫১৬ মুক্তিযোদ্ধা পরিবহন নামে একটি কাভার্ড ভ্যান বোঝাই করে ২০ টন চাল চট্টগ্রাম পাচার করার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে হাজীগঞ্জ চৌরাস্তা এলাকায় চেক পোস্ট বসিয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ গাড়িটি তল্লাশি করে। পরে গাড়ির ভিতরে চাঁদপুর শহরের সিএসডি গুদামের খাদ্য অধিদপ্তরের লোগো ব্যবহৃত বস্তাভর্তি চাল দেখতে পেয়ে গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর সিএসডি গোডাউনের লেবার সরদার চালগুলো গোডাউনের ভিতর থেকে গাড়িতে বোঝাই করে। পরে গাড়িটি খাদ্য গোডাউন থেকে বের হওয়ার সময় কোন স্কেল অর্থাৎ পরিমাপ করা হয়নি। এরপর মালগুলো তারা কুমিল্লার দাউদকান্দির ১ জন মেম্বারের কাছে বিক্রি করে। সেই মেম্বারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ফারুক ট্রেডার্সে চালগুলো বিক্রি করা হয়। এরপর লেবার সরদারদের নির্দেশে দালাল জামালের মাধ্যমে কভার্ড ভ্যান ট্রাকটি ভাড়া নেওয়া হয়। প্রায় সময় চাঁদপুর সিএসডি গোডাউন থেকে এভাবে ট্রাকে করে চাল বোঝাই করে চট্টগ্রাম নিয়ে বিক্রি করা হয়।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের ইউএনও মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, সরকারি গোডাউন থেকে মাল পাচারের ঘটনা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপস্থিত হই। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সেই ট্রাকসহ চালগুলো চাঁদপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, শনিবার বন্ধের দিন সিএসডি গোডাউন থেকে চাল বের হয়েছে কিনা তা জানা নেই। তবে ঘটনাটি যাচাই বাছাই করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পর আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন