পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চালিত ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রা

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যাত্রা শুরু করলো পরীক্ষামূলক ট্রেন। মঙ্গলবার (৪ঠা এপ্রিল) ১টা ২১ মিনিটে ভাঙ্গা স্টেশন থেকে একটি গ্যাংকার ট্রেন এবং সাত বগিবিশিষ্ট যাত্রীবাহী একটি স্পেশাল ট্রেন মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমে মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জের মাটিতে প্রথমবারের মতো ট্রেনের যাত্রা শুরু হলো।

এর আগে ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত গ্যাংকার ট্রেন চললেও এবার গ্যাংকারের পাশাপাশি পাঁচ বগি বিশিষ্ট একটি বিশেষ ট্রেনও পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। এ ছাড়া এটি ৪২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে যাবে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নিচতলায় ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার রেলপথ।

এর আগে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ভাঙ্গা হয়ে মাওয়া পর্যন্ত টেস্ট রান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সংসদ সদস্য আব্দুস সোবহান গোলাপ মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনসহ জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনকালে রেলমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকে আমাদের এই প্রকল্পের প্রাথমিক সফলতা ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া পর্যন্ত ট্রায়াল রান করছি। আশা করছি, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলবে। আগামী বছর নির্ধারিত সময়ের (২০২৪ জুন) মধ্যে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রীসহ অন্যরাও পরীক্ষামূলক ট্রেনের যাত্রী হিসেবে মাওয়ার উদ্দেশ্যে ভাঙ্গা ছাড়েন।

ট্রেনটিতে কোনও যাত্রী না থাকলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছিলেন। ট্রেনের বগিতে তাদের সেলফি তুলতে ও উল্লাস করতে দেখা গেছে।

ভাঙ্গা স্টেশন থেকে প্রথমে গ্যাংকার ট্রেন ছেড়ে দেয়। তার পরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৬৬২১ নম্বর ইঞ্জিন দ্বারা পরিচালিত ৫ বগির স্পেশাল ট্রেন যাত্রা করে। যাত্রীবাহী হলেও এই স্পেশাল ট্রেনে কোনও যাত্রী থাকছে না। এ রুটে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চালু হলে এ ট্রেনটিও সেই বহরে থাকবে। এই বিশেষ ট্রেনটি নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রস্তুত করা হয়েছে।

পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর রুটে চলাচলের জন্য চীন থেকে ১০০টি নতুন কোচ আনার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৪৫টি বগি বাংলাদেশে এসেছে।

এদিকে, ট্রেনযাত্রা দেখতে ব্যাপক উৎসুক জনতা দেখা গেছে। প্রথমবারের মতো ট্রেন পেয়ে মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জবাসীর মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে।