যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসম্যানের মুখে বাংলাদেশের প্রশংসা
যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ার সাউথ ক্যারোলাইনার কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট ২ থেকে নির্বাচিত, ফরেইন রিলেশন্স কমিটির সদস্য রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো উইলসন বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা ও অর্জনের স্বীকৃতি দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশংসার পর কংগ্রেস থেকেও একটি বিবৃতি পাওয়া গেল, সেখানেও প্রশংসিত হলো বাংলাদেশ। বিবৃতিটি কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ঢাকা থেকে প্রকাশিত খবরে। খবরে বলা হয়েছেঃ
বিবৃতিতে কংগ্রেসম্যান জো উইলসন বলেন, ‘দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা এবং পাকিস্তানপন্থী মিলিশিয়ারা লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা এবং আরও বহু মানুষকে আহত করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার এই যুদ্ধ ছিল গণতন্ত্র ও মুক্তির সংগ্রাম।’
জো উইলসন বলেন, ‘গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম দ্রæত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে তাদের মাথাপিছু জিডিপি বেড়ে ২,৪৫৭ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা এখন তার প্রতিবেশী দেশগুলোর মাথাপিছু জিডিপিকে ছাড়িয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৪৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। গড় আয়ু ৪৭ বছর থেকে বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে। বয়স্ক সাক্ষরতার হার বেড়ে ৭৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বাঙালি জাতি স্বাধীনতায় এভাবেই বিকশিত হয়েছে।’
শেখ হাসিনার প্রশংসা করে জো উইলসন বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যথেষ্ট আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি করেছে। তার নেতৃত্বে দেশটি খাদ্য উৎপাদন, দুর্যোগ স্থিতিস্থাপকতা, দারিদ্র্য হ্রাস, উন্নত স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এবং নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক উন্নতি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সফলভাবে মডারেট মুসলিম সমাজের মর্যাদা বজায় রেখেছে ও উগ্রবাদ দমন করেছে। আর দেশটির জনগণ বন্দুকের নলের দ্বারা কর্তৃত্ববাদী শাসনের পরিবর্তে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি সমর্থন দিয়েছে।’
মার্কিন এই রাজনীতিক বলেন, ‘আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার এবং একই সঙ্গে দেশটিতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের অন্যতম বড় উৎস। বিনিময়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ মার্কিন অর্থনীতিতে অবদান রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বছর বছর বেড়েই চলেছে। আমেরিকা বাংলাদেশে প্রধানত কৃষি পণ্য, বিমান, যন্ত্রপাতি, ইঞ্জিন, লোহা ও ইস্পাত পণ্য রফতানি করে থাকে। আর সেখান থেকে আমদানি করে পোশাক, ফুটওয়্যার, টেক্সটাইল পণ্য, খেলনা, খেলার সামগ্রী, বিভিন্ন ধরনের চিংড়ি এবং কৃষি পণ্য।’
তিনি বলেন, ‘আজ, মার্কিন জনগণ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১ বছর উদযাপনের সময় বাঙালি জাতি ও জনগণকে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং প্রশংসা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে পারস্পরিক অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং জাতীয় নিরাপত্তার লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের গঠনমূলক অংশীদার থাকার আন্তরিক দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন