প্রান্তিক পর্যায়ে দেশে অনেক প্রতিভাবান সাঁতারু লুকিয়ে আছে: নৌ বাহিনী প্রধান

বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সভাপতি ও নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে দেশে অনেক প্রতিভাবান সাঁতারু লুকিয়ে আছে। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশের প্রতিভাবান সাঁতারুদের সুপ্ত প্রতিভাগুলোকে খুঁজে বের করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ ধরণের উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন নতুন সাঁতারু খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে বলে বুধবার (১৪ জুন) বুধবার কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার গোমতী নদীতে শেখ রাসেল ১৯তম জাতীয় দূরপাল্লা সাঁতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। এর আগে গত ২৮ মে ২০২৩ বাংলাদেশ নৌবাহিনী সুইমিং পুল, বনানী, ঢাকায় উন্মুক্ত বাছাইয়ের মাধ্যমে ৭ জন পুরুষ সাঁতারু এবং ৭ জন মহিলা সাঁতারু চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়।

বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহযোগীতায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল, এমপি।প্রতিযোগিতা শেষে উপজেলার এ বি এম গোলাম মোস্তফা স্টেডিয়ামে আয়োজিত সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ও কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম।

এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে কমান্ডার ঢাকা নৌ অঞ্চল ও বাংলাদেশ নৌ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সভাপতি রিয়ার এডমিরাল খোন্দকার মিজবাহ উল আজীম, কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি আবদুল মান্নান, বিপিএম (বার), কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান ফারুক রোমেন, দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ, দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম শফিউদ্দিন, দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা কামাল চৌধুরী ও জাতীয় সুইমিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকসহ ফেডারেশনের অন্যান্য কর্মকর্তা, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা, বিপুল সংখ্যক সাঁতারু ও সাধারণ দর্শক উপস্থিত ছিলেন।

চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নির্বাচিত বিভিন্ন বয়সের ৭ জন পুরুষ সাঁতার এবং ৭ জন মহিলা সাঁতারু অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় পুরুষ সাঁতারুরা কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার গোমতী নদীর কংশনগর হতে শুরু হয়ে দেবীদ্বার পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার সাঁতারে অংশ নেয়।

প্রতিযোগিতার পুরুষ বিভাগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে ফয়সাল আহম্মেদ ১ ঘন্টা ৩৯ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রথম স্থান ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী হতে পলাশ চৌধুরী ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে জুয়েল আহম্মেদ ১ ঘন্টা ৪৪ মিনিট ২৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে।

অন্যদিকে, চূড়ান্তভাবে ৭ জন মহিলা সাঁতারু বুড়িচং উপজেলার গোমতী নদীর কংশনগর হতে শুরু হয়ে দেবীদ্বার পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে মহিলা বিভাগে বাংলাদেশ নৌবাহিনী হতে সোনিয়া আক্তার ১ ঘন্টা ১৩ মিনিট ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রথম স্থান ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী হতে সুরাইয়া আক্তার ১ ঘন্টা ১৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে মোছা- মুক্তি খাতুন ১ ঘন্টা ১৮ মিনিট ০৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে।

উল্লেখ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিভাবান সাঁতারুদের খুঁজে বের করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহযোগিতায় ২০১৭ সালে আয়োজিত ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত সেরা কৃতী সাঁতারুরা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে।

এই সেরা সাঁতারুরাই দেশ ও দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক সাঁতার অঙ্গনে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে বলে আশা করা যায়।