ময়মনসিংহে যুদ্ধাপরাধী পলাতক আসামী গ্রেফতার

ময়মনসিংহ জেলার কোতয়ালী থানার তিনকোনা পুকুর পাড় এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ও গ্রেফতারী পরোয়ানাভূক্ত আসামী মাহাবুব আলম মন্ডল (৭০) কে রবিবার গ্রেফতার করা হয়।

সে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার পশ্চিম বাখাই গ্রামের মৃত বসির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে। ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মমামুনের নেতৃত্বে এস আই সুমন ও এস আই মোফাখখির উদ্দিন, এএসআই আবুল বাসেদ সঙ্গীয় ফোর্সের একটি দল কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়।২০০৯ সালে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ ১৪ বছর সে ঢাকা ও বিভিন্ন এলাকায় পলাতক ছিল।

গত তিন দিন আগে ঈদ উপলক্ষে গোপনে ময়মনসিংহে এসেছে এরূপ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরিবার দুপুর সোয়া তিনটার দিকে ফুলপুর থানা পুলিশ তাকে কোতয়ালি থানা এলাকায় তার মেয়ে উর্মি আক্তারের ভাড়াটিয়া বাসা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যেসব অভিযোগ রয়েছে তা হল- ১. ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তৎকালীন পাক হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে গঠিত স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহায়তাকারী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে সরাসরি অংশগ্রহন করে। তার বিরুদ্ধে রুজুকৃত মামলার বাদী পরিমল চন্দ্র দাসের পিতা যোগেশ চন্দ্ৰ দাসসহ তার অন্যান্য আত্মীয় মোট নয় (৯) জনকে টেনে-হিঁচড়ে কংস নদীর পাড়ে নিয়ে যায় এবং রাইফেল ও স্টেনগান দিয়ে নির্বিচারে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে।

২.যুদ্ধ চলাকালীন সে পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করত: এলাকায় ত্রাস কায়েম করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের উপর অমানুষিক নিযার্তন করে অসংখ্য নিরীহ মানুষের বাড়ি-ঘর পুঁড়িয়ে দেয় এবং বাড়িতে থাকা সম্পদ লুন্ঠন, নারী ধর্ষণ ও হত্যাসহ জঘন্য অপরাধ চালিয়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সে হিন্দু সম্প্রদায়সহ সাধারন মানুষের জমিজমা আত্মসাৎ করে তাদের উপর ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।

আসামী মাহাবুব আলম মন্ডল ১৯৯০ সালের পূর্বে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিল। ১৯৯০-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বিএনপি’র ফুলপুর সদর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিল। ২০১২-১৪ সালে সে ফুলপুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর হিসেবে মনোনীত হয় এবং গোপনে নিজের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড অব্যহত রাখে।

মানবতাবিরোধী অপরাধ অভিযুক্ত ও গ্রেফতারী পরোয়ানা ভুক্ত এই আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।