লালমনিরহাটে শপথ গ্রহণের আদেশ, মানছে না কর্তৃপক্ষ

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক মোজামকে মহামান্য হাইকোর্টের রীট পিটিশন মামলায় যৌথবেঞ্চে মাননীয় বিচারপতি চলতি বছরের গত ১২ মার্চ শুনানী অন্তে ১৪ মার্চ৷ ৪৫৬১/২০২২ নং রীট পিটিশনকারী মোজাম্মেল হক মোজামকে রায় ঘোষণার ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে চলবলা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সাধারণ সদস্য হিসেবে শপথ অনুষ্ঠানের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

হাইকোর্টের এমন নির্দেশনাকে অমান্য করে শপথ গ্রহনে টালবাহানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহির ইমাম।

এমন ঘটনায় রোববার (২৬ জুন ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় কালীগঞ্জ রিপোর্টাস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক মোজাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সারাদেশে চতুর্থ দফায় অনুষ্ঠিতব্য লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের ৯নং তেঁতুলিয়া ওয়ার্ডে টিউবয়েল প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হই। একটি মিথ্যা মামলায় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে জেল হাজতে যাওয়ায় যথাসময়ে শপথ গ্রহণ করতে পারি নাই। পরে উক্ত ওয়ার্ড কোন ভোট গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করেন। পরে পুনঃনির্বাচন বন্ধে আমি হাইকোর্টে মামলা করলে মামা অন্য হাইকোর্টের বিচারিক আদালত আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত পুনঃনির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেন। এরপর আমি শপথ গ্রহণের জন্য হাইকোর্টে আরো একটি রিট পিটিশন মামলা করি।

মামলায় শুনানী শেষে মহামান্য হাইকোর্ট ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে আমাকে শপথ পাঠ করাতে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রদান করেন। কিন্তুু কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমার শপথ বাক্য পাঠ না করিয়ে নানা রকম টালবাহানা শুরু করেন। তালবাহানার এক পর্যায়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে জিপি লালমনিরহাটের সহিত পরামর্শ করে শপথ গ্রহণের পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।

কিন্তুু গত ২২ শে জুন নুরুল ইসলাম জিপি লালমনিরহাট স্বাক্ষরিত একটি পত্রে শপথ গ্রহণে পুনরূপ আইনি জটিলতা নেই বলে উল্লেখ করে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি পত্র প্রদান করেন যাহার স্বারক নং ৮৮ এবং গত ২৫ শে জুন একই ব্যক্তি স্বাক্ষরিত আরেকটি পত্রে যে তুই উল্লেখ করেছেন আইনি জটিলতা রয়েছে। একই ব্যক্তির রকম আইনি ব্যাথার কারণে মূলত এর জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
অপর দিকে হাইকোর্টের ব্যারিস্টারদের মতে মামা অন্য হাইকোর্টের কোন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ফাইলিং হলে উক্ত আপিলের শুনানীর আগ পর্যন্ত বিচারকদের পূর্ণরূপ রায় বা নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত পূর্বের রায় বলবৎ থাকিবে। এবং কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহামান্য হাইকোর্টের দেয়া রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্দেশনা পালন না করায় তিনি আদালত অবমাননা করেছেন।

এ ঘটনায় কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কমিশনার মাহবুবা রহমান জানান, মোজাম্মেল হক মোজাম নির্বাচিত হয়েছেন তার সরকারী গ্রেজেট প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তিনি শপথ না নেওয়ায় উপনির্বাচনে শৈলান চন্দ্র ভোটে অংশগ্রহন করে বিজয়ী হন। তবে মোজাম্মেল হকের দায়ের করা হাইকোর্টের রায়ে উপনির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেওয়ায় তিনি এখনও সরকারী কোন গ্রেজেট পাননি বলে জানান তিনি। তবে পুরো নির্বাচনের সমস্ত ফলাফল আমরা উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের নিকট প্ররন করেছি।

এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহির ইমাম বলেন, সদস্য মোজাম্মেল হক মোজামকে ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে শপথ বাক্য পাঠ করাতে একটি নিদের্শনা পেয়েছি। কিন্তু এ রায়ের বিরুদ্বে একটি আপিল ফাইলিং হওয়ায় একটি উকিল নোটিশ পাই। ফলে এর আইনি ব্যাখা চেয়ে জিপি লালমনিরহাট বরাবর প্রেরন করি। তার ব্যাখা মতে বিষয়টি আইনি জটিলতা থাকায় মোজাম্মেল হক মোজামকে ইউপি সদস্য হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করানো সম্ভব হয়নি।’