খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে রেড চিটাগাং জাতের গরুর চাহিদা বেড়েই চলেছে

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে রেড চিটাগাং জাতের গরুর চাহিদা বেড়েই চলেছে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে খাগড়াছড়িতে জমে উঠেছে পশু হাট। হাটে এবার পার্বত্য চট্টগ্রামে উৎপাদিত রেড চিটাগাং জাতের দেশীয় গরুর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
পাহাড়ের প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে গড়ে উঠা এসব রেড চিটাগাংয়া গরু খুব জনপ্রিয়। সরকারি সহায়তা পেলে পাহাড়ের রেড চিটাগাং দেশের কুরবানির গরুর চাহিদার বড় একটি অংশপূরণ করবে বলে স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীদের অভিমত।

সরেজমিন দেখা গেছে, এবার খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি’র প্রধান পশুর হাট বসেছে শহরের পুরাতন বাস স্টেশনের ট্রাক ট্রার্মিনালে। এছাড়া প্রতিবছর খাগড়াছড়ির চেংগী ব্রীজ সংলগ্ন বাজার, বান্দরবান গরু বাজার, রাঙ্গামাটি’র রিজার্ভ বাজার এবং কলেজ গেইট এলাকাতে ছোট পরিসরে পশুর হাট বসে। তিন পার্বত্য জেলাতে এবার পশুর কোনো সঙ্কট নেই বলে জানিয়েছেন ট্রাক টার্মিনালের গরু ব্যবসায়ীরা।

তারা জানান, রেড চিটাগাং গরু বাজারে ৫০হাজার থেকে ১লাখ ৫০হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। গরুর পাশাপাশি হাটে উঠেছে ছাগল। আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০থেকে ৪০হাজার পর্যন্ত। এবার ছোট ও মাঝারী সাইজের গরুর চাহিদা বেশি।

খামারিরা জানান, গরু মোটাতাজা করতে কোনো প্রকার ক্ষতিকারক ওষুধ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠে পাহাড়ি গরুগুলো। পাহাড়ি অঞ্চলে বেড়ে উঠা গরুগুলো উজ্জ্বল বর্ণের এবং সুঠামদেহী। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বেড়ে উঠা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটির গরুগুলো চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায়।

ব্যবসায়ীরা পাইকারী দামে ক্রয় করে খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটির হাট থেকে গরুগুলো বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাচ্ছেন। প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে পাহাড়ের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকার এগিয়ে আসবে এমন প্রত্যাশা স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীদের।

গরু ব্যবসায়ী আবুল হাসেম জানান, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পার্বত্য চট্টগ্রামের গরুর কদর বেশি। পাহাড়ের প্রাকৃতিক ঘাস খেয়ে বেড়ে উঠা এসব গরুগুলোকে নিরাপদ মনে করা হয়। তাই এসব গরু ভালো দামে বিক্রি হয়। মাঝারী সাইজের লাল বর্ণের দেশীয় গরু। নাম রাখা হয়েছে রেড চিটাগাং।

পাহাড়ের লতা, পাতা ও প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে গড়ে উঠা এসব গরু কোরবানির জন্য খুবই জনপ্রিয়। ওষুধ ও ভেজালমুক্ত খাবার খেয়ে বেড়ে উঠা রেড চিটাগাং গুরুর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। উৎপাদিত গরুর বেশিভাগই চলে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব মতে, এ বছর জেলায় গরু উৎপাদন হয়েছে ৩৯হাজার ২৯৮টি। জেলায় গরুর চাহিদা রয়েছে ৩৫হাজার ৯৪০টি। এর মধ্যে খামারে উৎপাদন করা হয়েছে ১১হাজার গরু। এছাড়াও ছাগলের মজুদ রয়েছে ১২হাজার ৯শত ৪৮টি। বাকিগুলো ব্যক্তি পর্যায়ে গৃহস্থলীরা পালন করেছেন।