যশোরের রাজগঞ্জে লাগামহীন বাজারে যেয়ে মাথাঘুরে যাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে মুদি মালামালের পাশাপাশি মাছ, ডিম, সবজিসহ সবপণ্যই সর্বোচ্চ দামে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যে আবার লাগাম ছিঁড়ে গেছে কাঁচা মরিচের দামের। সব মিলিয়ে বাজারে চরম অস্বস্তিতে সাধারণ ক্রেতারা। বিশেষ করে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষরা সংসারের প্রয়োজনীয় চাহিদা ঠিকমতো পূরণ করতে পারছেন না কোনোমতে। অনেককেই বাজার থেকে ফিরতে হচ্ছে ব্যাগের তলানিতে কিছু পণ্য নিয়ে। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) ও শুক্রবার (৭ জুলাই) রাজগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা গেছে- মাছ, শাক-সবজিসহ সবকিছুর দামই বাড়তি। ঈদ পরবর্তী বাজারে এসে অধিকাংশই ক্রেতারা বাজারের অস্বস্তির কথা বলেছেন। রাজগঞ্জ বাজারের বাসিন্দা মোঃ আব্দুস সাত্তার (৫৮) বলেন- বাজারে যাওয়ার কাইদা নেই। সবজির দাম অনেক বেশি। ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনতে হলো ৫৫ টাকা দিয়ে। তিনি বলেন- যারা সিমিত আয়ের মানুষ, বর্তমানে তাদের জীবন ধারণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন- মাছ বাজারের মাছের সংকট। তারপরেও যা আছে, তার আকাশ ছোঁয়া দাম। তেলাপিয়া ও কার্প জাতীয় মাছ কম-বেশি পাওয়া গেলেও সেগুলোর দাম অনেক। সিমিত আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। ৬টাই কেজি ইলিশ মাছ ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি। কি করে মানুষ কিনবে? মানুষ আসলে যাবো কোথায়। রাজগঞ্জ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রাজকুমার বলেন- ঈদের পর এখন মাছের বাজারে ক্রেতার ভিড় বেশি। সেতুলনায় মাছ উঠছে না বাজারে। যেগুলো উঠছে, সেগুলো আড়ত থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এজন্য খুচরা বাজারে মাছের অনেক দাম।
তিনি বলেন- এ বছর বাজারে মাছের আমদানী কম, এজন্য দামও বেশি। এদিকে বেড়েছে সব ধরনের শাক-সবজির দাম। গোল আলু, টমেটো, গোল বেগুন, লম্বা বেগুন, করলা, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, কচুর লতি, ঢ্যাঁড়শ, সবধরনের শাক-সবজির দাম বেড়েছে। রাজগঞ্জ বাজারের শরিফুল ইসলাম নামের একজন সবজি ব্যবসায়ী বলেন- চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজি উঠছে কম, এজন্য পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। সেকারনে খুচরা বাজারেও দিম বেড়েছে। রাজগঞ্জ বাজারে কাঁচা মরিচ কোনো কোনো দোকানে ৬০০টাকা, কোনো কোনো দোকানে ৫০০টাকা প্রতিকেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রাজগঞ্জ বাজারের ক্রেতা সফিউল আলম বলেন- এখন বাজারে আসলেই আতঙ্কে থাকতে হয়। কোন পণ্যের দাম কখন বাড়ছে, তা বলা যাচ্ছে না। একেক দোকানে একেক দাম। তারপরেও মানুষ কিনছে। কারন তার প্রয়োজন তাই। তবে, নিম্ন আয়ের মানুষ কিন্তু চাহিদায তুলনায় সবটুকু কিনতে পারছে না। কষ্টটা তাদের কিন্তু বেশি। কি রেখে কি কিনবে এটা ভাবতে ভাবতে মাথা ঘুরে যাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের।