দেশের সার্ববৌমত্ব রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে শের-ই-বাংলা নৌ-ঘাঁটি

আনুষ্ঠনিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করল দেশের বৃহৎ ত্রিমাত্রিক নৌ-ঘাঁটি বানৌজা শের-ই-বাংলা। বুধবার (১২ জুলাই) দুপুর সাড়ে বারোটায় গনভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ঘাঁটির কমিশনিং প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসময় তিনি সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কথা তুলে বলেন, দেশের সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মেখ মুজিবুর রহমান যে আধুনিক ক্রিমাত্রিক নৌ-বাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন, বানৌজা শের-ই-বাংলা ঘাঁটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তা আজ পূর্ন হল। বাংলাদেশের দক্ষিনা লের দুর্গম এলাকায় এ ঘাঁটি স্থাপনে সমুদ্রসীমানার নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর অপারেশনাল কার্যক্রমের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি দেশের সার্ববৌমত্ব ও দেশের চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভ‚মিকা রাখবে এই ঘাঁটি।

এসময় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর প্রধান এডমিরাল এম শাহিন ইকবাল ঘাঁটির প্রধান কমোডর এম মহব্বত আলী’র হাতে কমিশনিং পতাকা তুলে দেন। একই সময়ে খুলনা শীপইয়ার্ড লিমিটেড নির্মিত পেট্রোল ক্রাফট স্কোয়াড্রোন শহীদ দৌলত, শহীদ ফরিদ, শহীদ মহিব্বুল্লাহ, শহীদ আখতার উদ্দিন এবং ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি (এলসিইউ) বানৌজা ডলফিন, তিমি, টুনা ও পেংগুইন এরও কমিশনিং প্রদান করা হয়।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী বানৌজা শের-ই-বাংলা ঘাঁটিতে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হলে নৌ-বাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহিন ইকবাল তাকে স্বাগত জানান। এসময় বানৌজা শের-ই-বাংলা’র একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অফ অনার প্রদান করে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সংসদ সদস্যবৃন্দ, মুক্তযোদ্ধা নৌ-কমান্ডোগন, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তোলায় প্রধানমন্ত্রীর অসামামন্য অবদানের কথা তুলে ধরে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে নৌ-বাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহিন ইকবাল বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে নৌবাহিনীকে স্মার্ট, আধুনিক, শক্তিশালী গড়ার অংশ বানৌজা শেরে-ই-বাংলা ঘাঁটি। দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি অবৈধ মৎস্য আহরন, চোরাচালান দমন, মানবপাচার, চোরাচাল, মাদকচোরাচালান রোধসহ জনকল্যানমূলক কাজে ভ‚মিকা রাখবে।

উল্লেখ্য ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর রাবনাবাদ চ্যানেলের তীরে বিএনএস শের-ই-বাংলা’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

২০১৮ সালের ২ জানুয়ারী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী সভায় ১ হাজার ৮১.৫০ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইন চিফ সেকশন তত্বাবধান করছে।

ইতোমধ্যে এ ঘাঁটিতে র্নিমান করা হয়েছে অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক ভবন, এভিয়েশন সাপোর্ট ও হ্যাঙ্গার সুবিধা সম্বলিত মাল্টিপারপাস শেড, রিপেয়ার ও মেইন্টেন্যান্স ওয়ার্কশপ, এভিয়েশন সুবিধা, ডাইভিং স্যালভেজ এর কমান্ডো পরিচালনা সম্বলিত ইউনিট, নৌ-বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ ও ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল।