ডেঙ্গু-মশক নিধনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে ময়মনসিংহের মসিক সিটি করপোরেশন
মশা মারতে কামান দাগা একটি প্রবাদ বাক্য।তারপরও নগরে মশার উপদ্রুপ বেশি হলেই সবাই বলাবলি করে মশা মারতে কামান দাগাতে হবে নাকি? যাই হোক
বর্তমানে মশা ও ডেঙ্গুর প্রভাব বেড়ে গেলেও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মশা নিধনে ৯২ বর্গ কিলোমিটারের বিশাল এলাকায় কার্যক্রম চালাচ্ছে। মসিকের হাতে ফগার মেশিন আছে ৪০ টির মতো।
এরমধ্যে আবার ৫/১০ টি অকেজো হয়ে যায়। দ্রুত সেগুলো মেরামত করে আবারো কাজে লাগানো হয়। মসিক হবার আগে ২১ টি ওয়ার্ড যা ছিল, এখনো তাই আছে।অথচ সীমানা বেড়ে হয়েছে তিন গুন।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন হবার পর ৩৩ টি ওয়ার্ডে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মশার দাপট সন্ধ্যা হলেই ঝাকিয়ে বসে। দিনেও মশা আছে। মাত্র ২০ জন কর্মী নিয়ে ৩৩ টি ওয়ার্ডের ৯২ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মশক নিধন তামাশা ছাড়া কিছু নয়। তবে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে ক্র্যাশ পোগ্রামে আরো ৪০ জন লোকবল বাড়িয়ে কাজ করে। প্রায় ৮ লক্ষাধিক লোকের বাস সিটি করপোরেশনের ৩৩ টি ওয়ার্ডে।
এই ৩৩ টি ওয়ার্ডে সারা বছর মশক নিধনের জন্য লেবার আছে ২০ জন। অর্থাৎ ৪০ হাজার নগরবাসীর জন্য মাত্র ১ জন মশক নিধন কর্মী নিয়োজিত আছে। বর্তমান অবস্থার কথা বিবেচনা করে মশক নিধনে জনবল বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন নগরবাসী।আর যখন ডেঙ্গু দেখা দেয়, তখন ক্র্যাশ পোগ্রামের আওতায় আরো ৪০ জন কর্মী নেয়া হয়। যা গত ২৬/৭/২৩ইং থেকে শুরু হয়েছে।
মসিকের একটি সুত্র জানায়, ডেঙ্গু সাধারণত ড্রেনের পানি বা পুকুরের পানিতে জন্মায় না। বৃষ্টির পানি বা জমাট বাধা পানি তিন/ চার দিন বোতল,ডাবের খোসা,অব্যবহৃত পুরোনো টায়ারে,,গর্তে জমাট বাধা পানি ও নির্মানাধীন বিল্ডিং এর জমাট পানিতে ডেঙ্গুর লার্ভা জন্ম নেয়। নগরবাসী সচেতন হলে ডেঙ্গু জ্বর খুব একটা আতংক ছড়াতো না।
গত ২৬/৭/২৩ইং পর্যন্ত ময়মনসিংহ মেডিকেলে ১১৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ছিল,যাদের বেশীরভাগ বাইরে থেকে আসা। এনমধ্যে ২/৪ জন নগরের রোগী আছে।মসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান,মশক ও ডেঙ্গু নিধনে সিটি করপোরেশন সবসময় মাঠে কাজ করছে। কোথাও থেকে অভিযোগ আসলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা
নেয়া হয়।
তাছাড়া ক্র্যাশ পোগ্রামের আওতায় অভিযান চলমান আছে। সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ শাখা সুত্রে জানা গেছে গত ২০২০-২১ ইং সনে মশক নিধনে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ঐ সময় ব্যয় হয়েছিল৭৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ২০২১-২২ ইং সনে বাজেট ছিল ১ কোটি ৭৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা।ব্যয় হয়েছিল ১ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ও ২০২২-২৩ ইং সনে বাজেট ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
সব মিলিয়ে গত তিন বছরে মশক নিধন খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।তবে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৮২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ গত তিন বছরে বাজেটের চেয়ে এ খাতে ১ কোটি ৩ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানাযায়,ফগার মেশিনে ডেল্টা মেথিন ও স্প্রে মেশিনে টেমিফস নামে ঔষধ ছিটানো হয়।
তবে এসব ঔষধে মশা কতটুকু ধ্বংস হয়,সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। যেহেতু মশক নিধনের ঔষধের নাম স্থানীয় সরকার থেকে সিলেক্ট করা হয়, সেহেতু মসিকের করনীয় কিছু নেই।
এ ব্যাপারে মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন,ফগার মেশিন প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে সচল আছে। এখন পর্যন্ত মসিক এলাকায় মশা ও ডেঙ্গু নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ থাকায় আল্লাহর রহমতে আমাদের এখানে ডেঙ্গু রোগী নেই। বাইরের আক্রান্তরা এখানে এসে হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমরা চেষ্টা করছি,যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি-যাতে ডেঙ্গু রোগ না ছড়ায়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন