শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল ‘স্বল্প পরিসরে’ চালু হচ্ছে ৭ অক্টোবর

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল আগামী ৭ অক্টোবর ‘স্বল্প পরিসরে’ চালু হতে যাচ্ছে।

আগামী বছরের শেষ দিকে এ টার্মিনাল যাত্রীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচক।

মঙ্গলবার এই নতুন টার্মিনালে এক সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৭ অক্টোবর এ টার্মিনালের ‘সফট ওপেনিং’ করবেন।

“এই কাজটা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের এপ্রিলে। আমরা এটাকে অক্টোবরের মধ্যেই শেষ করতে পেরেছি। আশা করা যায় আগামী বছরের শেষ নাগাদ বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবেন যাত্রীরা।

“সফট ওপেনিংয়ের দিনে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে একটি ফ্লাইট অপারেট করে দেখব। তবে এটাকে অপারেশনাল বলা বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি হবে না।”

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, “সফট ওপেনিং মানে আমাদের স্ট্রাকচার রেডি, আমাদের ইকুইপমেন্টগুলো বসে যাচ্ছে। কিন্তু যে সংস্থাগুলো এখানে কাজ করবে তাদের সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও সমন্বয়ের দরকার আছে। ইকুইপমেন্টগুলোর সঙ্গে এখানে যারা কাজ করবেন, তাদের ক্যালিব্রেশনের প্রয়োজন আছে।

“এখানে পুরো সিস্টেমটাই অটোমেটেড। পুরো সিস্টেমটা ক্যালিব্রেশনের প্রয়োজন আছে। যে কোনো নতুন এয়ারপোর্টের ক্ষেত্রে এই সময়টা প্রয়োজন হয়। এটাকে বলা হয় ‘অপারেশন রেডিনেস অ্যান্ড এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার’ প্রক্রিয়া।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুটি অতিরিক্ত ট্যাক্সিওয়ের ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। সফট ওপেনিংয়ের পর এই টার্মিনালের অ্যাপ্রোন ব্যবহার করা যাবে। পুরনো টার্মিনালের অ্যাপ্রোনে ২৯টি উড়োজাহাজ রাখা যায়। সফট ওপেনিং হওয়ার পর থার্ড টার্মিনালের অ্যাপ্রোনে আরো ৮-১০টা উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে।

শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রতিদিন প্রায় ৩০টি এয়ারলাইন্সের ১২০ থেকে ১৩০টি ফ্লাইট ওঠানামা করে। এসব ফ্লাইটের ১৯ থেকে ২১ হাজার যাত্রী প্রতিদিন এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। হজ বা বিশেষ সময়ে যাত্রীর চাপ আরও বেড়ে যায়।

এই যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দিতে বিমানবন্দরের বর্তমানে চালু থাকা দুটি টার্মিনাল যথেষ্ট নয়। যে কারণে নতুন টার্মিনাল করা হচ্ছে বিমানবন্দরের মূল টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে।

২১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে কাজ পরিদর্শনে গিয়ে চলতি বছরের অক্টোবরেই তৃতীয় টার্মিনাল চালুর কথা জানিয়েছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।

বেবিচক চেয়ারম্যান মঙ্গলবার বলেন, “এরই মধ্য ৮২ শতাংশ কাজ সম্পাদিত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সফট ওপেনিং এর আগে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করব। আমরা আশা করছি আমাদের পরিকল্পনা মাফিক কাজ শেষ হবে।
“মহামারীর সময়েও এখানে কাজ থামেনি। ১১ থেকে ১২ হাজার লোক কাজ করে যাচ্ছে দিন-রাত। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া কিছুটা ধীর গতিতে হয়েছে। যার কারণে বন্দরে অতিরিক্ত সময় লাগছে।

মফিদুর রহমান বলেন, “আমরা প্রথম দেখেই ৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছিলাম। আমাদের প্রকল্পের নির্ধারিত ছিল বারোটি বোর্ডিং ব্রিজ। সাশ্রয় করা টাকা দিয়ে আরও কয়েকটি বোর্ডিং ব্রিজ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

পুরনো দুটো টার্মিনালের বছরে ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে সব মিলিয়ে বছরে ২ কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া যাবে।”