বশেমুরবিপ্রবিতে প্রধানমন্ত্রীর নামফলক ভাঙার ঘটনায় তদন্তে গড়িমসি

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর উদ্বোধনী নামফলক ভেঙে ফেলার ঘটনায় তদন্তে গড়িমসি করছে প্রশাসন। গত ২৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা ও সংবাদকর্মীদের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নামফলক ভেঙে ফেলার বিষয়টি নজরে আসে সবার।

পরবর্তীতে ২৯ আগস্ট ক্যাম্পাস ও একাডেমিক কার্যক্রম উদ্বোধনী স্মৃতি চিহ্ন উপড়ে ফেলার বিষয়ে বিবৃতি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। স্মৃতিফলকের স্থানটি শেখ হাসিনা চত্বর নামে পরিচিত এবং আবেগ জড়িত জানিয়ে বিবৃতির মাধ্যমে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানায় শিক্ষক সমিতি। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩০ আগস্ট উপাচার্যের কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও সংবাদকর্মীদের সাথে জরুরি বৈঠক করেন বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব। বৈঠকে নামফলক ভাঙার সাথে কে বা কারা জড়িত তা তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা সম্ভব এবং তদন্ত কমিটি গঠন করলে অতীতের ন্যায় বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যেতে পারে বলে অনেকেই মতামত প্রদান করলেও উপাচার্য তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে জোর দেন। উপস্থিত অনেকে তদন্ত কমিটি গঠনের পক্ষে মত দিলেও ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানালে সে বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন উপাচার্য।

তবে অনেক আগেই ৭ কার্যদিবস পেরিয়ে গেলেও শাস্তি নিশ্চিতের পরিবর্তে তদন্ত কমিটি নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে উপাচার্য জানালেও সে বিষয়ে জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ। তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে জানেন না প্রক্টর; নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান রেজিস্ট্রার, এখনো চিঠি পান নি বলে জানিয়েছেন চিফ ইঞ্জিনিয়ার।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, নতুন নামফলক তৈরি করা হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এস.এম. এক্সান্দার আলী বলেন, এখনো চিঠি পাই নি তদন্ত কমিটির। হয়তো কাল পাওয়া যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ দলিলুর রহমান বলেন,তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। এখনো রিপোর্ট প্রদান করা হয় নি।
তবে শেষ কার্যদিবসেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে উপাচার্যের পক্ষ থেকে এমন তথ্য প্রদান করা হয় নি জানিয়ে শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ ফায়েকুজ্জামান মিয়া বলেন, বৃহষ্পতিবার আমরা উপাচার্যের সাথে বেশকিছু দাবি নিয়ে কথা বলেছি। এর মধ্যে অন্যতম ছিলো প্রধানমন্ত্রীর নামফলক ভেঙে ফেলার ঘটনায় তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেয়া। শেষ কার্যদিবসে বৈঠক চলাকালীন পর্যন্ত কমিটি করা নিয়ে উপাচার্য কিছু জানান নি বরং বলেছেন তিনি তদন্ত কমিটি করবেন। আমরা এখনো এখনো রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এমন কিছুই দেখি নি। আমরা শিক্ষক সমিতি প্রধানমন্ত্রীর নামফলক ভাঙার ঘটনাটি মনে করি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক একটা ঘটনা।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধুর ম্যূরাল তৈরির স্থানে প্রধানমন্ত্রীর নামফলক পড়ে। সেটি ভেঙে ফেলে কে বা কারা। নামফলকের স্থানকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা চত্বর নামে একটি চত্বরও গড়ে উঠেছে। নামফলকটি না ভেঙে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা থাকার পরেও ভেঙে ফেলায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয় প্রশাসনকে।