কলারোয়া-চন্দনপুর প্রধান সড়কের নির্মাণকাজের দীর্ঘসূত্রতায় সীমাহীন ভোগান্তি

সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে চন্দনপুর পর্যন্ত প্রধান সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দমদম-সোনাবাড়িয়া হয়ে কলারোয়ার সীমান্ত অভিমুখী ভাঙনকবলিত এই সড়কের বিভিন্ন স্থান গর্ত, খানা-খন্দে ভরা। বর্ষা মৌসুমের আগে প্রশস্তকরণের নামে সড়কের দুই পাশ কেটে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় চলতি বর্ষায় তা ভাঙতে শুরু করেছে। দীর্ঘসময় ধরে থেমে থেমে চলছে কেটে ফেলা গর্ত ভরাটের কাজ। তবে সোনাবাড়িয়া ঈদগাহ সংলগ্ন সড়কটির ভেঙে যাওয়া অংশটিতে সম্প্রতি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করায় তা যানবাহন চলাচলের কিছুটা উপযোগী হয়েছে। এছাড়া গোটা সড়কজুড়ে পথচারী, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল ঝুঁকির মধ্য দিয়ে চলাচল করছে। ঝাঁপাঘাট, সোনাবাড়িয়া ও চন্দনপুরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে এই ব্যস্ততম সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ঝাঁপাঘাট বাঁশতলা নামক স্থান থেকে থেকে শুরু করে ঝাঁপাঘাট সরকারি প্রাইমারি স্কুল হয়ে গাবতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক ভেঙে-চুরে খানা-খন্দে ভরে গেছে। যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের পাশাপাশি কালক্ষেপণ হচ্ছে গন্তব্যে পৌঁছতে। সোনাবাড়িয়া বারিকের মোড় নামক স্থান থেকে সোনাবাড়িয়া কলেজ অভিমুখী সড়ক বাঁকটি ভেঙে-চুরে গেছে। সোনাবাড়িয়া ঈদগাহ থেকে স’মিল হয়ে ইটভাটা পর্যন্ত সড়কটিরও বেহাল দশা। একই সড়কের পশ্চিম দিকে রামকৃষ্ণপুর যাত্রীছাউনি রেখে তিনবটতলা নামক স্থানটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভ্যান, ইজিবাইক বা থ্রি-হুইলার বাহনের যাত্রী পথে নামিয়ে দিয়ে এই ভাঙাচোরা সড়ক পার হতে হয়। যাত্রীরা ভীষণ দুর্ভোগের মুখে পড়েন প্রতিদিন। অনুরূপ বেহাল অবস্থা দৃশ্যমান হয়েছে একই সড়কের বিক্রমপুর রাইসমিল থেকে বয়ারডাঙ্গা বাজার কালভার্ট পর্যন্ত। বয়ারডাঙ্গা থেকে চন্দনপুর কলেজ পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থান ভাঙাচোরা অবস্থা দেখা যায়। সবমিলিয়ে ১৫ কিলোমিটার ওই রাস্তাটির অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত নাজুক। আর এই ভাঙাচোরার কারণ প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনাও।
কলারোয়ার ঐতিহ্যবাহী সোনাবাড়িয়া ও চন্দনপুর সীমান্ত জনপদের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রম অবনতি ঘটছে দিনের পর দিন। উন্নয়ন পরিকল্পনা-পরিকাঠামো নির্ধারণ করা হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রতা দীর্ঘায়ত করছে মানুষের ভোগান্তি।

এ বিষয়ে সোনাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল জানান, তিনি এ দুরবস্থা লাঘবের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। সোনাবাড়িয়া ঈদগাহ সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত কালভার্ট সড়কের স্থানটি সংস্কার করে তা যানবাহন চলাচলে উপযোগী করার ব্যবস্থা করেছেন।

তিনি বলেন, তিনবটতলা থেকে সোনাবাড়িয়া পর্যন্ত সড়ক একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। জরুরিভিত্তিতে এই সড়কের
নির্মাণকাজ করা না গেলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।

বেহাল সড়কের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সুদীপ্ত কর দীপ্ত জানান, গোটা সড়কটি নির্মাণে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। আগামী বছরের ফেব্রæয়ারিতে এ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। সেকারণে এখনই তাদেরকে কাজ শেষ করার বিষয়ে তিনি তাগিদ দিতে পারছেন না।
সবমিলিয়ে এই সড়কের দুর্ভোগজনিত দুর্দশার যে শীঘ্র সমাধান হচ্ছে না, তা বলাই যায়।