মার্কিন ভিসা নীতি প্রয়োগের ফলে বিএনপিই বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে : ড. সেলিম মাহমুদ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, মার্কিন ভিসা নীতি নতুন কোন বিষয় নয়। এটি এ বছরের ২৫শে মে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছিল। এই ভিসা নীতি তারা প্রয়োগ শুরু করেছে। এই ভিসা নীতি বিরোধী দলের উপরেও প্রযোজ্য। শুধু তাই নয়, এই নীতির ফলে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ছে বিএনপি জামাত গোষ্ঠী।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, কারণ এই ভিসা নীতির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করবে তাদের উপরে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বাধাগ্রস্থ করছেনা, নির্বাচনও প্রতিহত করছে না। তাই এই নীতি প্রয়োগের ফলে ‌আওয়ামী লীগের কোন অসুবিধা নেই। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। বাংলাদেশের এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং এর স্থিতিশীলতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অবদান। এদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা তার মাধ্যমেই পুনরুদ্ধার হয়েছে। তিনি এদেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ হাসিনা একটি টেকসই সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্বাচন ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার করেছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি মোট ৮২ টি সংস্কার করেছেন। এদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কারো গণতন্ত্রের জন্য মায়া কান্না মানায় না।

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, মার্কিন ভিসা নীতির প্রয়োগের ফলে কয়েকটি কারণে বিএনপির রাজনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতির কারণে আওয়ামী লীগের কোন অসুবিধা হবে না। ভিসা নীতি ঘোষণার পর যে চারটি কারণে বিএনপির রাজনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সেই কারণগুলো হচ্ছে:

এক, এতোদিন বিএনপি বলে আসছিল, তারা কোন অবস্থাতেই শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেনা। প্রয়োজনে যে কোন মূল্যে নির্বাচন প্রতিরোধ করবে তারা। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন নতুন নীতি অনুযায়ী নির্বাচন প্রতিরোধ করা সবচেয়ে বড় অপরাধ। তাই শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন প্রতিহত করার বিএনপির সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে। নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্যে বিএনপির যেকোনো সন্ত্রাস ও নাশকতা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়বে।

দুই, বিএনপি’র বিগত কয়েক বছরের রাজনীতির মূল লক্ষ্য ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। তারা বলে আসছে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া শেখ হাসিনার অধীনে তারা নির্বাচনে যাবেনা। যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপির আন্দোলনের প্রতি সহায়ক কিংবা সহানুভূতিশীল কোন বক্তব্য নেই। এই নীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কোন স্বীকৃতি নেই। মার্কিন এই নীতির ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিটি ভেস্তে গেল। অথচ বিএনপি এতো বছর দেশের রাজনীতির মাঠ ছেড়ে শুধু বিদেশীদের উপরই নির্ভর করেছিল।

তিন, বিএনপি প্রায় দুই বছর ধরে বলে আসছিল, নির্বাচনের আগে এমন একটি বিদেশি স্যাংশন আসবে যার ফলে আওয়ামী লীগ সরকার লন্ডভন্ড হয়ে যাবে। এর ফলে বিএনপি তাদের সুবিধা জনক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবে। নির্বাচন চলে আসলো। কোন স্যাংশন আসলো না। বরং যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসলো, সেটি তাদের নির্বাচন প্রতিহত করার ষড়যন্ত্র অনেকটা নস্যাৎ করে দিল।

চার, বিএনপি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বলে আসছিল, বিএনপি নির্বাচনে না আসলে সে নির্বাচন আন্তর্জাতিক মহলে অংশগ্রহণমূলক না হওয়ার কারণে গ্রহণযোগ্য হবে না। ‌ যুক্তরাষ্ট্রের এ নীতির ফলে বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপি স্বেচ্ছায় নির্বাচনে না আসলে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না- এই ধরনের কোন বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতিতে নেই। তারা নিজে থেকে নির্বাচন বর্জন করলে এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না- এই বক্তব্য সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির ফলে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন তারা পাবে না – এটি পরিষ্কার। মোটা দাগে বলতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে বিএনপি’র নির্বাচন ভন্ডুল করার ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেল। পাশাপাশি শেখ হাসিনার অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ভন্ডুল হয়ে যাবে- এরকম অপপ্রচার যারা করছিল, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে।