সিরাজগঞ্জে চাকরিচ্যুত সাংবাদিক ‘গুণিজন’ হেলালের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

সিরাজগঞ্জের ‘গুণিজন’ হিসেবে পরিচিত জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি হেলাল আহমেদের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে এক নারীকে ধর্ষণ, মারধর ও মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী বর্তমানে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাাধীন রয়েছেন।

ওই নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করে বলেন, বছর খানেক আগে একটি মামলার বিষয়ে নিউজ করানোর জন্য সাংবাদিক হেলাল আহমেদের শহরের বড়পুল সংলগ্ন অফিসে পরপর কয়েকদিন যান তিনি। এই সুযোগে হেলাল আহমেদ তাকে চায়ের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে অফিসের ভিতরের বেড রুমে নিয়ে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেন। সেই ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন হেলাল।

পাশাপাশি ওই নারীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরিও করেছেন তিনি। এ অবস্থায় গত সোমবার সন্ধ্যায় হেলাল আহমেদ ওই নারীকে শহরের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত তার মেয়ের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর ওই নারীকে বেধরক মারধর করে তার ব্যবহৃত মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়।

ওই মোবাইলে উভয়ের মধ্যে চলা অনৈতিক সর্ম্পকের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও ভিডিও ধারণ করা ছিল। নারীর আর্তচিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন। এরপর তিনি সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাবে যান। সেখান থেকে তিনি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওই নারী থানায় আসার পর তার কাছ থেকে ঘটনার বর্ননা শুনে চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তার মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়েছে। ওই নারী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ২০২৩ সালের শুরু থেকেই অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলায় ‘গুণিজন’ হিসাবে পরিচিত এই সাংবাদিক। বছরের শুরুতেই তিনি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করতোয়া পত্রিকা থেকে চাকরিচ্যুত হন। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতির পদ খোয়াতে হয় তাকে। প্রায় একই সময়ে সিরাজগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির পদও হারান তিনি।

হেলাল আহমেদ বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সংগঠন নজরুল একাডেমির সভাপতি, সারেগা সংগীত একাডেমির সভাপতি, এপ্রেক্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও এনডিপির মানবাধিকার সংস্থার সহ সভাপতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হেলাল আহমেদ বলেন, সাজানো ঘটনায় আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই নারীকে আমি কিছু করিনি, আমার বউ তাকে একটু মারধর করেছে। বিষয়টি সমঝোতা করার চেষ্টা চলছে।