মাইকের উচ্চশব্দে অতিষ্ঠ যশোরের রাজগঞ্জবাসী
‘সুখবর, সুখবর, সুখবর।’ রাজগঞ্জবাসীর জন্য সুখবর। রাজগঞ্জে কম দামে ইলিশ মাছ, গরুর মাংস বিক্রির মাইকিং চলছে প্রতিনিয়ত। এতে উচ্চ শব্দ দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। আজ (গতকাল- ১১ অক্টোবর, বুধবার) রাজগঞ্জ মাছ বাজারে ইলিশ মাছের দাম কম। প্রতি কেজি ইলিশ মাছ বিক্রি হবে….টাকায়। আজ ইলিশ মাছ বিক্রির শেষ দিন। আর ২ মাস ইলিশ মাছ পাবেন না।
পদ্মা নদীর টাটকা ইলিশ ও ঝাটকা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে রাজগঞ্জ বাজারের। এছাড়াও গরুর মাংসের দাম কম, একটি বিরাট গরু জবাই করা হবে। প্রচার মাইকের এমন অতিরিক্ত শব্দের যন্ত্রণায় রাজগঞ্জবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই ধরনের মাইকিং রাজগঞ্জ বাজারে নিত্যদিনের যন্ত্রণা। বিষয়টি এখন চলে গেছে রাজগঞ্জবাসীর কাছে অসহনীয় পর্যায়ে। ইজিভ্যানে ও ইজিবাইকে একটি মাইক বেঁধে আবার কখনো দু’টি মাইক বেঁধে উচ্চ শব্দে চলে এ ধরনের প্রচারণা।
দীর্ঘ সময় ধরে এভাবে মাইকিং করতে এখন আর দরকার পড়ে না ঘোষকের। ঘোষণাটি একবার রেকর্ড করে মোবাইলের মেমোরি কার্ডে নিয়ে ভ্যান অথবা ইজিবাইকে মাইক বেঁধে চলতে থাকে দিনভর বিরতিহীন এ মাইকিং। মাইকের উচ্চ শব্দে রাজগঞ্জ বাজার কেন্দ্রেীক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিধিমালায় জনগুরুপ্তপূর্ণ এলাকা ও স্কুল কলেজ এলাকায় মাইকিং বন্ধ রাখার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু তা মানছে না কেউ।
২০০৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। রাজগঞ্জ বাজারের উজ্জল নামের একজন ওষুধ ব্যবসায়ী জানান- প্রতিয়ত বিকট শব্দে মাইকে বিভিন্ন ঘোষণা দেয়। এই মাইক যখন দোকানের সামনে আশে, তখন কোনো কিছুই শোনা যায় না। বিকট শব্দ থেকে কোনো প্রকার সমাধান পাচ্ছিনা।
মাইকের এই বিকট শব্দে সকল কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এদিকে শব্দ নিয়ন্ত্রণকারী দপ্তরের কোনো তৎপরতা নেই। রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষক মোঃ মাসুদ কামাল বলেন- স্কুলে ক্লাস চলাকালে যখন মাইকের উচ্চ শব্দে প্রচার হয়, তখন ক্লাস করা অনেক সমস্যা হয়। কোনো কিছুই শোনা যায় না।
রাজগঞ্জ এলাকার সচেতন সমাজ ও সূধী সমাজের নেতৃবৃন্দ বলেন- প্রতিনিয়ত মাইকের উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছি। এরা স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, অফিস কিছুই মানে না। এমন নির্যাতন থেকে রাজগঞ্জবাসীকে মুক্ত হতে চাই। বিশেষজ্ঞরা বলেন- অতিরিক্ত শব্দদূষণ শিশুসহ সব বয়সের মানুষের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত শব্দে মস্তিষ্কে বিরক্তির কারণ ঘটে। ফলে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি হয়, কর্মক্ষমতা কমে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, বিশ্লেষণ ক্ষমতা কমে যায়। কাজকর্মে মন বসেনা।
মানুুষ যখন ধীরে ধীরে বার্ধক্যে পৌঁছে যায় তখন শব্দদূষণের মারাত্মক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। শব্দদূষণ নামের এই বড় ধরনের সমস্যা থেকে রেহায় পেতে দ্রæত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন