ময়মনসিংহে বিলুপ্তপ্রায়, গুলগুলা পিঠার দেখা মিলল গ্রামের বাজারে

এক সময়ে গুলগুলা পিঠা ময়মনসিংহের গৌরীপুরের রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমান দোকানে, চায়ের দোকানে হরহামেশাই বিক্রি করতে দেখা যেতো। গ্রামের এই ঐতিহ্যের খাবারটি নগর সংস্কৃতির বিকাশে বিলুপ্ত প্রায়।
বৃহস্পতিবার রাতে গুলগুলা পিটা বিক্রির দৃশ্যের দেখা মিলে গৌরীপুরের রামগোপালপুর ইউনিয়নের ধূরুয়া বাজারে নুরুল ইসলামের দোকানে।

দোকানের সামনে রাখা চুলোয় আগুন জ্বালিয়ে কড়াইয়ের গরম ডুবো তেলে আটার সাথে অন্যান্য উপকরণের মিশ্রণ গোল গোল করে ফেলে গুলগুলা পিঠা তৈরি করছেন এই দোকানি। প্রতি পিস পিঠার দাম মাত্র পাঁচ টাকা। দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় গ্রামের মানুষের কাছে এই পিঠা এখনো বেশ জনপ্রিয়।

দোকানী আমিনুল ইসলামের বাড়ি রামগোপালপুর ইউনিয়নের ধূরুয়া গ্রামে। ধূরুয়া বাজারে দোকান ভাড়া নিয়ে গত ১৫ বছর ধরে সিঙ্গারা, পুরী, পেঁয়াজি তৈরির পাশাপাশি গুলগুলা পিঠাও তৈরি করেন তিনি।

গুলগুলা পিঠা তৈরি করতে কুসুম গরম পানিতে আটা, চিনি, লবন, বেকিং সোডা, জিরা, মৌরির মিশ্রণ করে ময়ান বানিয়ে আধঘন্টা রেখে দিতে হয়। এরপর কড়াইয়ের তেল গরম করে আটার মিশ্রণ গোল গোল করে ফেলতে হয়। গরম গরম ভাজা গুলগুলা খেতে অনেক মজা।

প্রতিদিন সন্ধ্যায় গুলাগুলা পিঠা তৈরি করেন দোকানি নুরুল ইসলাম। গরম গরম এই পিঠা খেতে অনেকেই ভিড় করেন দোকানে।

গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, গুলগুলা পিঠা নরম তুলতুল এই পিঠার উপরিভাগ মচমচে। ভেতরটা নরম। খেতেও মজাদার। দামও কম। রেসিপি জানা থাকলে বাসাবাড়িতেও খুব সহজেই এই পিঠা তৈরি করা যায়।

পিঠ খেতে আসা মো: রফিক মিয়া বলেন, নগর সংস্কৃতির চাপে গ্রামাঞ্চলের অনেক পিঠার মতোই গুলগুলা পিঠা হারিয়ে যাচ্ছে। স্কুলে পড়াকালীন গ্রামের বাজারে গুলগুলা পিঠা ১ টাকা/ ৫০ পয়সা দিয়ে কিনে খেয়েছি। এখন পাঁচটাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে আকারে একটু ছোট।

স্থানীয় বাসিন্দা হাতেম খান বলেন, গুলগুলা পিঠা গ্রামের বাজারের সড়কের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয় বলে অনেকেই খেতে চান না। তাই ভালো মানের আটা, চিনি, তেল ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে বাড়িতেও এই পিঠা তৈরি করে খাওয়া যায়।

দোকানী নুরুল ইসলাম বলেন, গুলাগুলা পিঠাকে অনেকে গুলগুলি পিঠা বলে। ১৫ বছর ধরে এই পিঠা বিক্রি করছি। গ্রামের শিশুদের কাছে এই পিঠা ভীষণ প্রিয়। অনেকেই দোকানে এই পিঠা খেয়ে বাড়িতেও নিয়ে যান। প্রতিদিন দুইশত পিসের বেশি গুলগুলা পিঠা বিক্রি হয়।