মযমনসিংহের গৌরীপুরে সুরিয়া নদীতে বাঁধ দেয়ায় পানি উপচে কৃষকের ক্ষতি
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সুরিয়া নদীতে বাঁধ দিয়ে অবাধে মাছ শিকার চলছে। উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে সুরিয়া নদীটি প্রবাহিত হয়েছে। বাঁশের তৈরি বানা বা বেড়া দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ইউনিয়নের নিজ মাওহা ও রামকৃষ্ণপুর গ্রামের তিনটি বাঁধ দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করায় নদীপাড়ের ৭/৮টি গ্রামের দুই সহস্রাধিক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মাওহা ইউনিয়নে সুরিয়া নদীর উপরে বাঁধ দেয়ার কারণে উপজেলার ইছুলিয়া, কৃষ্ণপুর, খান্দার, নয়ানগর, বাউশালীপাড়া, কুশ^াপাড়া গ্রামের কৃষকরা তাদের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। ধানের পাশাপাশি নদীরচরে উৎপাদিত সবজিক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বোরো ফসলের জন্য ধানের চারা উৎপাদনের জন্য জমি তৈরী করতেও বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানী বাসিন্দারা।
নিজ মাওহা গ্রামের মোবারক হোসেন গং নামের এক ব্যক্তি গ্রামের উত্তরপাড়া, নিজ মাওহা গ্রামের মধ্যবর্তি স্থানে আবুল কাশেম, মাহবুব আলমসহ পাঁচ-ছয়জন মিলে এবং রামকৃষ্ণপুর গ্রামের জিন্নাতুল, মাসুদ, রফিকুল ইসলাম ও ফিরোজ মিয়া মিলে বাঁধ দিয়েছেন।
বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার বিষয়ে জানতে চাইলে নিজ মাওহা গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, এখন তো ধান নষ্ঠ হয়েই গেছে। দুই তিন দিন হলো এই বাঁধ দিয়েছি। কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি বাঁশের দেয়া বাঁধ তুলে দিবেন বলেও জানান তিনি।
নিজ মাওহার মধ্যবর্তী গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, এর আগে কখনো বাঁধ দিই নি। এবারই প্রথম। বৃষ্টির সময় বাঁধ তুলে দেয়া হয়েছিলো আবার ২/৩ দিন পূর্বে বাঁধ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। শুক্রবর গভীর রাতে পুলিশ এসে সব মাছ নদীতে ছেড়ে দিয়ে যায় বলেও তিনি জানান।
রামকৃষ্ণপুর গ্রামের জিন্নাতুল ইসলাম জানান, এখন নদীর পানি কমে গেছে বলে কয়েকদিন যাবত বাঁধ দিয়েছি। এই বাঁধে পানি আটকে না। কয়েকদিনের মধ্যে তুলে দিবেন বলেও জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্থ নয়ানগর বাউশালী গ্রামের বাসিন্দা এমদাদুল হক বলেন, বাঁধের কারণে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের ধান, সবজি ও পুকুরের মাছের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের গ্রামের বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় এক সপ্তাহ বিদ্যালয়টি বন্ধ রাখতে হয়েছে। বোরো ধানের জন্য বীজতলা তৈরী, এছাড়াও আলুসহ বিভিন্ন সবজি চাষের উপযুক্ত সময় কিন্তু বাঁধ নিরসন না হওয়ায় পানি কমছে না। বাঁধ নিরসনের জন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়েরের কথাও তিনি জানান।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আল ফারুক জানান, নদীতে বাঁধ দেয়ার কারণে উজানের মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যক্তির স্বার্থে এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করা হয় এবং মাছের প্রজননও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ বিষয়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রশাসনের প্রতি আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন