যশোরের মনিরামপুরে আমন ধান ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমন, দিশেহারা কৃষক

যশোরের মনিরামপুরে চলতি আমন ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। বিশেষ করে মাজরা ও কারেন্ট পোকায় আক্রান্ত হয়ে ধানগাছ মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে ফলন নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন এ উপজেলার কৃষকেরা।

সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন। পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষকদের।

সরেজমিনে- উপজেলার শেখপাড়া খানপুর, বাঙ্গালীপুর, নেহালপুর, খেদাপাড়া, ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। উপজেলার ময়নার বিলে ও তার পাশের কৃষি এলাকায় একের পর এক জমিতে মাজরা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণে ফলন্ত ধানের শীষগুলো সাদাবর্ণ ধারণ করেছে এবং দানা নষ্ট হয়ে গেছে।

জমির প্রায় এক তৃতীয়াংশ ধানগাছ এভাবে আক্রান্ত হয়েছে। যারা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন তাদের ফসল কিছুটা রক্ষা পেলেও অনেকের ক্ষেত প্রায় পুরোটাই নষ্ট হওয়ার পথে। উপজেলার মাছনা গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম তার জমিতে কীটনাশক স্প্রে করছিলেন।

তিনি জানান- আমি চলতি বছর প্রায় ৩ বিঘা জমিতে হাইব্রীড-৭৫ ও গুটি স্বর্ণা ধানের চাষ করেছি। চারা রোপনের পর থেকে নানা সমস্যায় ভুগছি। প্রথম দিকে কারেন্ট পোকার আক্রমণ ঘটে। পরে পাতা মরা ও পঁচানী রোগ দেখা দেয়। এখন শুরু হয়েছে মাজরা ও কারেন্ট পোকার ব্যাপক আক্রমণ।

এবার যে হারে কারেন্ট পোকা ধরেছে, আগে কখনও এমনটা দেখা যায়নি। এই পোকার কারণে ধান গাছে ফলন্ত শীষগুলোর দানা নষ্ট হয়ে সাদা হয়ে পড়েছে এবং ধান গাছের মাথা পুড়ে লাল হয়ে গেছে দ্রæত এ রোগ এক গাছ থেকে আরেক গাছে ছড়িয়ে পড়ছে।

অন্যান্য কৃষকের সাথে কথা হলে তারাও জানান রোপনের পর থেকে পঁচানী, কারেন্ট পোকা ও এখন মাজরা পোকার আক্রমনে ফসল ধ্বংসের মুখে। ফলন নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি

অফিসার রিতুরাজ সরকার জানান- বিষয়টি আমরা জেনেছি। ইউনিয়ন ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারদেরকে মনিটরিংয়ের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে আমরাও মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছি। কৃষকদের পরামর্শ বিষয়ে বলেন- আমরা তাদের পার্চিং পদ্ধতি (ক্ষেতের মধ্যে গাছ বা বাঁশের ডাল পুতে দিতে বলেছি) ওই ডালে পাখি বসে পোকাগুলোকে খেয়ে ফেলবে।

পাশাপাশি জমিতে কীটনাশক স্প্রে করারও পরামর্শ দিচ্ছি। স্থানীয় এক কৃষক জানান- খানপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কর্মকর্তা কৃষি রুবিনা আক্তার ও হাসিনা খাতুন ধান গাছের মাজড়া এবং কারেন্ট পোকা থেকে কিভাবে কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন এবং সরেজমিনে মাঠে এসে ধান ক্ষেত পরিদর্শন করছেন বিএস রুবিনা আক্তার ও হাসিনা খাতুনের পরামর্শে অনেক কৃষক উপকৃত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে রুবিনা আক্তার জানান- তিনি প্রায় প্রতিদিনই তার এলাকাতে সরেজমিন মাঠে যেয়ে কিভাবে কৃষকদের ফসলকে এই কারেন্ট পোকা থেকে রক্ষা করা যায় তারই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।