ঠাকুরগাঁয় ভুয়া স্বাক্ষরে কৃষকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে
ঠাকুরগাঁও সদরের এক কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৩০ জন কৃষকের ভুয়া স্বাক্ষর দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কৃষকরা বলছেন, কৃষি অনুষ্ঠানে তাদের নাম ও টাকা বরাদ্দ থাকলেও তা জানেন না তারা। তবে অভিযোগ প্রমানিত হলে বিভাগীয় ব্যাবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের কিসমত তেওয়ারীগাঁও শাহপাড়া মোড় এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা এসব অভিযোগের কথা জানান।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) কিসমত তেওয়ারিগাঁও এলাকায় কৃষকদের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন গড়েয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদ। সভায় ৫০জন কৃষকের জন্য জন প্রতি ৩০০টাকা সম্মানি ভাতা বরাদ্দ থাকলেও তা দেয়া হয় মাত্র ১৮ থেকে ২০জন কৃষককে।
বাকি ৩০জন কৃষকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদের বিরুদ্ধে। রাজ্জাকুল ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, অবহিতকরণ সভায় আমাকে ডাকেনি। কিন্তু ওই সভায় অংশ নেয়ার তালিকায় আমার নাম ছিল। পরে শুনছি আমার টাকা ওই কৃষি কর্মকর্তা ভাগিয়ে নিয়েছে।
আঞ্জুয়ারা বেগম নামে এক কৃষানী বলেন, সভায় আমার নামও ছিল কিন্তু আমি জানি না। পরে শুনছি আমার নামে ভুয়া স্বাক্ষর করে টাকা তুলে নিয়েছে কৃষি অফিসার। শুধু তাই নয় আমার নামের মত করে আরও তিনটি ভুয়া নাম বানিয়ে টাকা আত্মসাত করেন তিনি।
তেওয়ারীগাঁও এলাকার বাসিন্দা রুবেল ইসলাম বলেন, সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। যে সব কৃষকের নাম ওই অনুষ্ঠানের তালিকায় দেয়া আছে তাদের বেশির ভাগই জানেনা। এক অনুপস্থিত কৃষকের স্বাক্ষর করতে বলেন কৃষি অফিসার। পরে জানতে পারি ওই কৃষক নিজেও জানে না তার নাম এ অনুষ্ঠানে দেয়া আছে।
একই গ্রামের তাজিরুল ইসলাম নামে আরেক কৃষক বলেন, আমি আমার স্ত্রী দুজনের নাম থাকলেও শুধু আমাকে দেয়া হয়েছে। আমার স্ত্রীর টাকা তারা রেখে দিয়েছে। এ কৃষক আরও অভিযোগ করে বলেন, কৃষি কার্ড করতে গিয়ে ওই কৃষি কর্মকর্তা আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। যেটি সরকার বিনামূল্যে দেয় তা কৃষি অফিসারের কাছ থেকে তা টাকা দিয়ে কিনতে হলো।
কৃষকের ভুয়া স্বাক্ষর নিয়ে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে অভিযুক্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদ বলেন, অনেক কৃষক টাকা পায়নি এই অভিযোগটি আমার কাছে এসেছিল। এখানে সমস্যা হয়েছিল যে কৃষক ট্রেনিংয়ে থাকার কথা ছিল তার অনুপস্থিতিতে যে আসছিল তাকে টাকা দেয়া হয়েছে।
তালিকায় নাম দেয়া কৃষকদের জানানো হয়নি তাদের অবহিতকরন সভার বিষয়ে এমন প্রশ্নে এ উপ-সহকারী বলেন, ৫০জন কৃষককে টাকা দেয়া হয়েছে। কৃষি কার্ডে কৃষকদের কাছ থেকে টাকাহাতি নেয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন,ঘটনাটি তদন্ত করা হবে। সত্যতা থাকলে অভিযুক্ত কৃষি উপসহকারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন