কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মানববন্ধনে ছাত্রদলের বাঁধা

কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধনে ছাত্রদলের বাঁধা ও ব্যানার কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে বাঁধা কিংবা ব্যানার কেড়ে নেয়া নয় কুড়িগ্রামবাসীর বৃহৎ স্বার্থে শুধুমাত্র মানববন্ধনের আয়োজকদের নিবৃত করার চেষ্টার করা কথা স্বীকার করেছেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মানববন্ধনে বাঁধা দেয়ার ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

(১৪ নভেম্বর) কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে “আওয়ামীলীগের একাধিক পদধারী, স্বৈরাচারের দালাল ও দুর্নীতিবাজ কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি মোঃ জাকির হাসেনের পদত্যাগ ও তার মাধ্যমে সকল নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন” শীর্ষক ব্যানার নিয়ে দাঁড়ায় কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ সময় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক আসাদুজ্জামান আকাশ ও তার সহযোগীরা এ সময় মানববন্ধন করা যাবে না মর্মে সাধারণ ছাত্রদের নিবৃত্ত করা চেষ্টা করে এবং ব্যানার কেড়ে নেয়।

তবে ছাত্রদলের কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখার আহবায়কের দাবি ভিসি এই মহুর্তে পদত্যাগ করলে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বাঁধগ্রস্ত হবে। এমন আশঙ্কা থেকে মানববন্ধনে তাদের আপত্তির কথা তুলে ধরেন। পরে কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিনিধির সহযোগিতায় সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য মানববন্ধন করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি সাদিকুর রহমান সাদিক জানায়, ‘আমরা কোন ফ্যাসিস্ট সরকারের দালালদের কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দেখতে চাই না। এজন্য ভিসিসহ নিয়োগপ্রাপ্তদের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি। কিন্তু ছাত্রদলের যে ভূমিকা তা স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য বাঁধা মনে করছি। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা মানববন্ধন করতেই পারি।’

মানববন্ধনে অংশ নেয়া কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাগিব পাটোওয়ারী বলেন, ‘আমরা আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া বর্তমান ভিসির পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করবো এটা ছাত্রদলের নেতাদের সাথে সমন্বয় করেছি। কিন্তু তারা সময় দিতে না পারায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের নেতাদের সমন্বয়ে এই আয়োজন করি।

কিন্তু ছাত্রদলের নেতারা আমাদের প্রোগ্রামকে শিবির সহ নানা ট্যাগ দিয়েছে। ফ্যাসিস্টদের দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসির বিরুদ্ধে আমরা মানববন্ধন করতেই পারি। সেটা যেকোন দলের সদস্যই করতে পারে। কিন্তু ছাত্রদলের নেতারা এসে বাঁধা দিলেও পরে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় মানববন্ধন করেছি। তবে আমরা মনে করি ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নাই।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক আসাদুজ্জামান আকাশ বলেন, ‘কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ^বিদ্যালয় আমাদের সবার একটি কাঙ্খিত প্রতিষ্ঠান। এটি রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। ভিসি আওয়ামীলীগের নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি আমরা এটা সবাই জানি। আমরা সবাই ভিসির পদত্যাগ চাই।

তবে এখনই নয়। ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভর্তি সমাপ্ত সহ আনুষ্ঠানিক কাজ সম্পন্ন হবে তার পর যৌথভাবে পদত্যাগের আন্দোলন হওয়া উচিত। এখনই আন্দোলন করলে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়ে যাবে। ব্যানার কেড়ে নেয়া ও বাঁধা দেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

এ বিষয় কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাসান জোবায়ের হিমেল জানান, ‘মানববন্ধনে বাঁধা দেয়া কিংবা ব্যানার কেড়ে নেয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। আমরা শুধু তাদেরকে বোঝাতে চেয়েছি এই মহুর্তে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করলে জেলার মানুষের বড় ক্ষতি হবে। আগামী প্রজন্মের ক্ষতি হবে। ভিসির পদত্যাগ আমরা একমাস পর করতে চেয়েছি। কিন্তু একটি অংশ তড়িঘড়ি করে মানববন্ধন করেছে।’