রাঙ্গামাটি আমীর আলী’র অত্যাচার নির্যাতন থেকে রক্ষা ও ন্যায় বিচার পেতে ভূক্তভোগীদের আকুঁতি

প্রতিবেশীদের ভূমি অবৈধভাবে দখলসহ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মামলা-হামলাসহ প্রাণনাশের হুমকিদাতা জনৈক আমীর আলীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে রাঙামাটি শহরে সাংবাদিক সম্মেলন করে নিরাপত্তা ও প্রতিকার চেয়েছে কয়েকটি ভূক্তভোগী পরিবার।

রাঙ্গামাটির ভেদভেদী এলাকায় মঙ্গলবার সকাল ১১টায় এই সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগীরা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মোঃ আফসার হোসেন, মোঃ আক্তার হোসেন ও মোঃ রবিউল হোসেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, রাঙামাটি শহরের শিমুলতলী এলাকায় বসবাসরত কয়েকটি পরিবারের জায়গা-জমি অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখলকারি আমীর আলী প্রভাব খাটিয়ে আমাদের উপর নির্মম নির্যাতন করেছে।

আমীর আলী প্রভাব খাটিয়ে আমাদের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে আমাদের জায়গা-জমি লিখে নেয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, স্বৈরাচারি সরকারের পতনের পর আমীর আলী নানান মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারনা চালিয়ে নিজেকে স্বৈরাচারের দোসরের খোলস থেকে আড়াল করার অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে। এই মিথ্যা মামলাবাজ আমীর আলীর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংবাদ সম্মেলনে আবেদন জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনের প্রদত্ত লিখিত বক্তব্য:

আমির আলী, পিতা- মৃতঃ খুল্যা মিয়া, সাং- শিমুল তলী, ভেদভেদী, রাঙ্গামাটি সদর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা, আমার বাবার ক্রয় কৃত ০.২৫ (পচিশ শতক) একর রেকর্ডীয় জমির পাশে অবশিষ্ট খাস জমিতে আমরা দীর্ঘদিন বসবাস করে আসিতেছি। কিন্তু আমার পাশবর্তী ০.৭৫ (পচাত্তর শতক) একর জমির মালিক উপরে উল্লেখিত আমির আলি বিগত ১৮ বছরে ২৮ মামলা দিয়ে আমার বাবার ক্রয়কৃত ০.২৫ (পঁচিশ শতক) একর জায়গা সহ বসতবাড়ি হতে আমাদের কে উচ্ছেদ করেছে।

কিন্তু তিনি আমাদের উচ্ছেদ করেও খান্ত হননি। ২০০৬ সালে একটি চুরির মিথ্যা মামলা দিয়ে মোঃ আফসার হোসেন কে জেল হাজতে পাঠায়। তখন এলাকাবাসী ও তৎকালীন পৌর বিএনপি সভাপতি শাহ আলম সাহেব খবর নিয়ে দেখে এ ধরনের চুরির কোন ঘটনা ঘটে নি। এরপর থানায় কথা বলে আফসারকে জামিনের ব্যবস্থা করেন। সেদিনই আমির আলির বাসায় খাবারের আয়োজন করে আমাদের বাবার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। ঐ কাগজ দিয়ে আমার বাবার নামে মিথ্যা ভাড়াটিয়া কাগজ তৈরী করিয়া আমাদেরকে উচ্ছেদ করেন।

উচ্ছেদ করেও খ্যান্ত হন নি, ২০২১ সালে এপ্রকারে উভয় পক্ষ সমঝোতায় একমত হয়ে উভয়পক্ষ জায়গা বিক্রির জন্য সম্মত হয়। কিন্তু আপোষনামা হলেও তিনি সম্পূর্ন জায়গা বন্ধক রেখে আই এফ আই সি ব্যাংক হতে এক কোটি টাকা গোপনে লোন নেওয়ার জন্য উদ্ধত হয়।

আমরা খবর পাইলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে আপত্তি জানায়। পরবর্তী সময়ে সে সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসান মাহমুদকে ব্যবহার করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাকে ফোন দিয়ে আমাদের তিন ভাইয়ের নামে চাদাঁবাজির মামলা করে এবং আমাদেরকে ৪১ দিন জেলে রাখে। এরপর দক্ষিণ চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ কে রাঙ্গামাটি এনে তৎকালীন এমপি দীপংকর তালুকদার কে বিষয় টা দেখার জন্য অনুরোধ করেন। দীপংকর তালুকদার যুবলীগের মুজিব কে বিষয়টি সরজমিনে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

তিনি উভয় কাগজ যাচাই-বাছাই করে বিষয়টি সুরাহা করতে পারেনি। যা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান ও জানতেন। সোলায়মান, শুক্কুর আসবাব পত্র সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং পেয়ারু পরবর্তী আসবাব পত্র সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহ সমাধানের অনেক চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পারেননি।

আমার বাবার ক্রয়কৃত জমি আমির আলি বিভিন্ন ভাবে মামলা হামলা দিয়ে এখন পর্যন্ত রেজিষ্ট্রি করতে দেননি। আমার বাবা ০.২৫ (পচিশ শতক) একর জায়গা ক্রয় করেন ১৮,৭৫,০০০/- (আট লক্ষ পঁচাত্তর হাজার) টাকা দিয়ে এবং আমির আলি ০.৫০ (পঞ্চাশ শতক) একর জায়গা ১,২৫,০০০/-(একলক্ষ পচিশ হাজার) টাকা দিয়ে যাতে সে সরকারের পাওনা ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিতে পারে।

তার ক্রয় সূত্রে কোন চৌহদ্দি ছিলনা এবং আদালত চৌহদ্দি অর্ন্তভুক্ত করা যাবে না বলে আদেশ দিলেও সে জালিয়াতির মাধ্যমে চৌহদ্দি অর্ন্তভূক্ত করে, আদেশের মামলা নাম্বার- ৫৫৯। যাহা আদালত অবমাননার সামিল।

৫ই আগষ্টের পর তড়িগড়ি করে সে আরেকটি ‘ঘর নির্মাণ করতে গেলে তাকে সমাজে ডেকে পাঠায়। সমাজে আসার পরে তার ছেলে ৯৯৯ এ কল করে তার বাবাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে।

কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এস আই জাহাঙ্গীর আফসারকে ফোনের মাধ্যমে আমির আলির বিষয় জানতে চায়, তখন আফসার তাকে জানান যে আমির আলি সমাজের অফিসে আছেন। তিনি পুলিশকে সমাজের অফিসে আসতে অনুরোধ করেন। অনুরোধ করলে এস আই জাহাঙ্গীর সমাজের অফিসে আসেন। এস আই জাহাঙ্গীর আমির আলি কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে কোন প্রকার অপহরণ বা চাদাঁবাজির অভিযোগ নাকচ করেন এবং সে সেচ্ছায় এসেছিলেন বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন যা ভিডিও করে রাখা আছে। এস আই জাহাঙ্গীর উভয়পক্ষকে ২ দিন পর বসে সমাধান করার জন্য পরার্মশ প্রদান করেন এবং উভয়কে নিজ নিজ বাসায় পাঠিয়ে দেন।

কিন্তু আমির আলি সেদিন সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে ৬০,০০,০০০/-(ষাট লক্ষ) টাকা চাদাঁবাজির মিথ্যা জিডি করে। রাঙ্গামাটি সেনা জোন কমান্ডার বরাবরে ৩৫,০০,০০০/-(পয়ত্রিশ লক্ষ) টাকা চাদাঁবাজি এবং তাকে মারধরের কথা উল্লেখ করে অভিযোগ করেন। এরপর দিন জোন কমান্ডার আমাদের উভয়পক্ষকে ডাকেন এবং এ বিষয়ে তদন্ত করেন। তিনি তদন্ত করে আমাদের উভয়কে সামাজিক ভাবে বসে সমাধানের পরার্মশ প্রদান করেন।

গত ১৪/১১/২০২৪ইং তারিখে সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ উভয় পক্ষ বৈঠক করলে আমির আলির উগ্র মেজাজের কারনে সে দিন সমাধানে পৌছানো সম্ভব হয়নি এবং ২ দিন পর আবার বসার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সে না বসে ২৯/১১/২০২৪ইং তারিখে সে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে সে দাবি করে যে তার কাছ থেকে ২ কোটি ২৫ লক্ষ চাদাঁ দাবি করেছি বলে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য প্রদান করে। যে প্রত্যেক বার ভিন্ন ভিন্ন চাদাঁর টাকার কথা বলে যাতে বোঝা যায় সে মিথ্যা কথা বলছে।

অবশেষে সে নিজেকে বিএনপি-জামাতের কর্মী দাবি করে এবং সে বলে যে আমি টাকা দিয়ে সবাইকে কিনে নিব এবং বিএনপির লোক দিয়ে বিএনপির লোককে পিটাব। পরিশেষে তার নামে ০.৭৫ (পচাঁত্তর শতক) একর জায়গা থাকলেও সে দখলে আছে প্রায় ১.৫ (এক একর ৫০ শতক) একর জায়গা। আমরা তার টাকার কাছে অসহায়। এমতবাস্থায় মহোদয় দীর্ঘ ১৬ বছরের অত্যাচার নিপিড়ন হতে মুক্তি পাওয়ার আশায় আপনার দারস্থ হলাম।