সাতক্ষীরায় প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্যোগে বেগম রোকেয়ার জন্মবার্ষিকী পালন
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪৪তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর ২০২৪) বিকাল ৫ টায় প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্যোগে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাদদেশে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. খগেন্দ্রনাথ ঘোষ।
প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহাজাহান সিরাজ এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সাতক্ষীরা জেলার সমন্বয়ক নিত্যানন্দ সরকার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সাতক্ষীরা জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাস্টার আব্দুল জব্বার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সদস্য সচিব মো: মুনসুর রহমান, পৌর কমিটির আহবায়ক মো: বায়েজীদ হাসান, এড. আবুল কালাম আজাদ, আবু তালেব, নির্মল দাস, দুর্লভ কুমার, জতীময় সরকার, কামরুল ইসলাম, হেলাল প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, বাঙালি মুসলমান সমাজে নারী স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর বেগম রোকেয়া বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের নবজাগরণের সূচনায় প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন। বাঙালি মুসলিম সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকার এবং নারী স্বাধীনতার পক্ষে নিজের মতবাদ প্রচার করেন। কিন্তু বিশেষ করে সাতক্ষীরায় আজ পিছিয়ে সেই নারীরা।
এই জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান সাতক্ষীরা কলেজের শুরু থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই লক্ষাধিক নারী শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করে নিজেদের আলোকিত করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে চাকরি করছেন। অনেকে মারাও গেছেন। তবে অধিকাংশই গৃহিনী হয়ে ঘরের কাজের মধ্যে থেকেছেন। শিক্ষার আলো ওই নারীরা জ্বালাতে পারছেন না। আমরা সেই কালো দিনে যেতে চাই না।
যে আন্দোলনে বৈষম্যের কথা বলা হয়েছে। বৈষম্য বিলোপের কথা বলা হয়েছে। সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপনে নিবন্ধন ফি জমা দেওয়ার যে একটা ব্যাপার সেটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নহে। এই কমিটির আহবায়ক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর মুক্তিযোদ্ধা সনদের জন্য দুই বছর চাকুরী বর্ধিত হয়েছিল।
সেই আহবায়ক লিয়াকাত পারভেজ যদি ২০০০ টাকা ফি নির্ধারণের কথা শিকার করে থাকেন তাহলে আজকে আমরা ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার শহীদ মিনার থেকে বলবো এটা ঠিক হয়নি। যারা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তাদের দায়িত্ব কিভাবে বাস্তবায়ন করবেন। প্রয়োজনে দ্বারে দ্বারে যেয়ে অর্থ সংগ্রহ করবেন।
বক্তারা আরো বলেন, বেগম রোকেয়ার সেই অবরোধ বাসিনীর কথা মাথায় রেখে এখানে বসেছি আমরা। কোনো অবরোধের দায় এভাবে আমাদের মাথার উপর রেখে সমাজের পরতে পরতে চাপিয়ে দিলে মেনে নেবো না। একটি বড় কাজ হচ্ছে। এটি সম্মিলিতভাবে করা দরকার। কালকে যে এটা শেষ করতে হবে এমন নহে। বিনাশ্রমে কাজ করার অনেক উদ্যোগী ব্যক্তি আছেন তাদের চিহ্নিত করতে হবে।
এমন কোনো খরচ নেই যে ২০০০ টাকা ফি প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ১৫০০ টাকা ফি বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিতে হবে। এই টাকা দিয়ে কেন শিক্ষার্থীরা নিবন্ধন করতে না পেরে মুখ লুকিয়ে বসে থাকবেন। অনেক বন্ধুরা আছেন তাদের এই টাকা দিয়ে নিবন্ধন করার সক্ষমতা নেই। আমাদের বান্ধবীরা অনেকে দিদিমা হয়েছেন। অনেকে মারা গেছেন।
বাকিরা ঘর সংসার করছেন। যারা আছে তাদের অনেককে নাতি-নাতনির হাত ধরে এই অনুষ্ঠানে আসতে হবে। কেন তারা বঞ্চিত হবেন? তাই সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপনে নিবন্ধন ফি সবাই জন্য সহনীয় ও গ্রহণযোগী করার আহবান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন