নীলফামারীতে কনকনে ঠান্ডায় স্থবরি জনজীবন

নীলফামারীতে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। সারাদিন দেখা মিলছে না সূর্যের।সড়কে বাস ও দূরপাল্লার পরিবহনগুলো হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। কনকনে ঠান্ডায় কাজে বের হওয়া মানুষজন চরম বিপাকে পড়েছেন।

বিশেষ করে গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টে ভুগছেন অসহায় মানুষজন। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ নেই শীতবস্ত্রের।খোলা মাঠে গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতা ও বিক্রেতার উপচে ভিড় চোখে পড়ার মতো।

জেলা শহরের হাই স্কুল মাঠে (বড় মাঠ) ও ফুটপাথে গরম কাপড় কিতে এসে, সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের আব্দুল হক বলেন, গ্রাম ঘুরে মরিচ পেঁয়াজের দোকান ফেরি করে যা আয়, তাই দিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার চলে। শীত থেকে রক্ষা পেতে আজ বড় মাঠের লন্ড্রি বাজারে গরম কাপড়ের দোকানে এসেছি।

যা দাম চাচ্ছে, তা আমার সামর্থ্যের বাইরে।জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোট বাচ্চার একটি ফুল হাতা সোয়েটার ৮০ টাকা, মেয়ের জন্য একটি পুরোনো কার্টিগান ১৬০ টাকা, আমার জন্য একটি ফুল হাতা সোয়েটার ১৮০ টাকা মিলে ৪২০ টাকায় নিলাম। এই টাকা আমার সাত দিন বাজার খরচ হতো। কিন্তু উপায় নাই, শীত থেকে শিশুদের রক্ষা করা বাবা হিসেবে আমার দায়িত্ব।

এবার সরকারিভাবে কোন কম্বল বা সোয়েটার পাইনি।নীলফামারী পৌর শহরের নিউবাবু পাড়ার বাসিন্দা আলেয়া বেগম (৬৫) বলেন, ‘মাঘ মাস পড়ছে, তাই প্রচুর ঠান্ডা। আজ সকালের কনকনে ঠান্ডায় মেসে রান্নার কাজে যেতে পারিনি। দুপুর বেলা তাপ বাড়লে রাতেরসহ রান্না করে দিয়ে আসবো। কী করবো?

কাম কাজ না করলে সংসার চলবে কীভাবে?’সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ২৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ৯৫ শতাংশ। অপরদিকে, বাতাসের গতিবেগ একবারে নেই। সৈয়দপুর বিমান বন্দরসহ জেলায় দৃষ্টিসীমা রয়েছে মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যে।

তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই আবহাওয়া আরও দুই-একদিন থাকতে পারে।জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘তিন দফায় ৩৪ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে জেলার ছয় উপজেলায় তা বিতরণ করা হয়েছে। তবে আরও ১০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। যদি তা পাওয়া যায়, তাহলে দ্রত বিতরণ করা হবে।’