পঞ্চগড় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্য দিতে তালবাহানা

মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পঞ্চগড় কার্যালয়ে পূর্বের প্রকল্পসহ চলমান প্রকল্পের তথ্য দিতে তালবাহানা, মানা হচ্ছেনা তথ্য অধিকার আইন অভিযোগ উঠেছে। ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পঞ্চগড় জেলায় একতলা ও দ্বিতলা ওয়াশব্লক প্রকল্পের সংখ্যা, ব্যয় বরাদ্দ ও টেন্ডারকৃত নির্বাচিত ঠিকাদারের পরিপূর্ণ বিষয়ে জানতে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করা হলেও দপ্তরটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমলে নিচ্ছেন না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে গড়িমসি করে দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছেন।

জানা যায়, গত ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ সরেজমিনে দেখতে গেলে চোখে পড়ে মাগুরমারী দাফাদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লকটি। কাছে গিয়ে দেখতে পান সাম্প্রতিক হন্তান্তরিত ওয়াশব্লকটির সামনে ও পিছনের দেয়ালে শেওলা জমে আছে। এমন চিত্র দেখার পর জেলায় ওয়াশব্লকের তথ্য জানতে গত ২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর পঞ্চগড় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন প্রতিবেদক মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম। কিন্তু আবেদন দেয়ার পরও তথ্য না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।

অথচ, তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর ধারা ৯ এর উপ-ধারা (১) এ বলা আছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন অনুরোধ প্রাপ্তির তারিখ হইতে অনধিক ২০ (বিশ) কার্য দিবসের মধ্যে অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করিবেন। উপ-ধারা (২) এ বলা আছে, উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অনুরোধকৃত তথ্যের সহিত একাধিক তথ্য প্রদান ইউনিট বা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকিলে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে উক্ত অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করিতে হইবে। আর উপ-ধারা (৩) এ বলা আছে, উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোন কারণে তথ্য প্রদানে অপারগ হইলে অপারগতার কারণ উল্লেখ করিয়া আবেদন প্রাপ্তির ১০ (দশ) কার্য দিবসের মধ্যে তিনি উহা অনুরোধকারীকে অবহিত করিবেন। এছাড়া ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৬) বলা হয়েছে, কোন অনুরোধকৃত তথ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট সরবরাহের জন্য মজুদ থাকিলে তিনি উক্ত তথ্যের যুক্তিসংগত মূল্য নির্ধারণ করিবেন এবং উক্ত মূল্য অনধিক ৫(পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করিবার জন্য অনুরোধকারীকে অবহিত করিবেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও এ দপ্তর থেকে কোনো তথ্য সরবরাহ করা হয়নি।

জানতে পারা যায়, প্রতিবেদক তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পর দফায় দফায় উক্ত অফিসে তথ্য নিতে গেলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সময় ক্ষেপন করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মিনহাজুর রহমান। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, কেবলমাত্র তেঁতুলিয়া উপজেলার তথ্য নিতে। কিন্তু প্রতিবেদক জেলার তথ্য নিতে আগ্রহী হলে তথ্য না দিয়ে শুরু করেন তালবাহানা। এতে তথ্য না দিয়ে সময় পার করিয়ে দেন ৩ মাস।

এ ব্যাপারে গত রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিনহাজুর রহমানের নিকট প্রতিবেদক তথ্যের আবেদনের ভিত্তিতে তথ্য দেওয়া হবে কিনা জানতে গেলে তিনি বলেন, ওই দিনই ফোন দিয়ে জানিয়ে দিবেন তথ্য প্রদানে মূল্য পরিশোধের কথা। কিন্তু রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রতিবেদককে কোনো মূল্য পরিশোধের কথা জানানো হয়নি।