ঘোষণা দিয়ে ধানমন্ডি-৩২ ভাঙচুর-আগুন দিলো ছাত্র-জনতা

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল অধিবেশন নিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা ‘বুলডোজার মিছিল’ চলে। একযোগে বাড়ির ভেতরে ঢুকে চলেছে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় ‘লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২’ নামের এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। এরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ির সামনে জড়ো হতে শুরু করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এক পর্যায়ে তারা বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়েন ও ভাঙচুর চালান।

রাত ৯টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। জ্বলছে আগুন। অনেকেই দিচ্ছে মুহুমুর্হু স্লোগান। পুরো বিল্ডিংটির অবকাঠামোই ভেঙে ফেলা হচ্ছে। যদিও গত ৫ আগস্ট এক দফা ৩২ নম্বরের এই বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছিল।

বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা বলছেন, যারা ছাত্র হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল সেসব ফ্যাসিবাদীদের কোনো চিহ্ন বাংলাদেশের মাটিতে রাখতে চাই না। অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে তার শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়া উত্তেজিত ছাত্র-জনতাকে, ‘খুনি আসলে লাইভে, জনতা যাবে ৩২-এ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

ঘোষণা দিয়ে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে ভাঙচুর ছাত্র-জনতার

ভেঙে ফেলার ঘোষণা দিয়ে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বুধবার রাত ৮টার দিকে তারা ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন।

জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যানসার মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সন্ধ্যার পর থেকে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে আছি। প্রতি মিনিটে শত শত মানুষ আসছে। আমরা বুলডোজার দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচারের চিহ্ন মুছে দিতে চাই।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ছাত্রসমাজের উদ্দেশে গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই ঘোষণার পরই ছাত্র-জনতার মাঝে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।

অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা ঘোষণা দিয়েছেন, ঠিক যে সময়ে শেখ হাসিনা বক্তব্য দেয়া শুরু করবেন, তখনই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভবনে ভাঙচুর চালানো হবে।

সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি।”

পরে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফেইসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।”

এর আগেই বুধবার বিকেলে আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ইলিয়াস হোসাইন ও পিনাকী ভট্টাচার্য ফেইসবুকে ‘ধানমণ্ডি ৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল’ ঘোষণা করেন।

এসব কর্মসূচির কারণে ধানমণ্ডি এলাকাল নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) জিসানুল হক পৌন ৮টায় বলেন, “আমরা নিরাপত্তা বাড়িয়েছি।”

সেখানে অন্য কোনো বাহিনী আছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপাতত এখানে শুধু পুলিশ আছে।”