নোবিপ্রবিতে মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত


যথাযোগ্য মর্যাদায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১শে ফেব্রুয়ারি) সকালে নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল এর নেতৃত্বে শোক পদযাত্রা, কালো ব্যাজ ধারণ ও কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শোক পদযাত্রা শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়।
শহিদ মিনারে প্রথমে নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজুয়ানুল হক এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ হানিফ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
এরপর নোবিপ্রবির বিভিন্ন অনুষদ, ইনস্টিটিউট, হল, বিভাগ, কর্মচারীবৃন্দ ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইসমাইল, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ রেজুয়ানুল হক এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ হানিফ।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড মুহাম্মদ হানিফ মুরাদ বলেন-১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যেসকল শিক্ষক, ছাত্র বা কর্মচারী শহিদ হয়েছেন আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। একটা বিষয় বলতে চাই, ৫২ সাল, ৬৯, ৭১ বা ৮৯ সালে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল।
ঠিক একইভাবে ২৪ সালেও আমরা সেই একই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জীবন দান করেছিলাম।এই সকল আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। শেষ একটা কথা বলতে চাই, বিভিন্ন আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের একটা স্বপ্ন ছিল সুন্দর একটি দেশ গড়ে তোলা। আমি সবাইকে আহ্বান করব তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ – উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজুয়ানুল হক বলেন-সবাইকে ভাষা দিবসের শুভেচ্ছা। আমাদের একটা কথা মনে রাখা উচিত, আমরা শুধু ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষা নিয়ে বেশি মাতামাতি করি। বাকি এগারো মাস আমাদের আর কোন খবর থাকে না। এটা হওয়া উচিত নয়। এই ভাষাকে উন্নতি করার জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যা যা করা উচিত সেটা আমরা করব।
বিভিন্ন ভাষা আন্দোলনে আমাদের যারা শিক্ষার্থী ছিল তারাই হচ্ছে জীবন দিয়েছিল। আমরা যারা শিক্ষক বা কর্মকর্তা ছিলাম আমরা পেছন থেকে তাদেরকে সাপোর্ট দিয়ে গেছিলাম ।আমাদের একটা কথা মনে রাখা উচিত সবসময় আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।সুন্দর একটি দেশ গড়ে তোলার জন্য আমরা সব সময় চেষ্টা করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইসমাইল তাঁর বক্তব্যে বলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে যারা শহিদ হয়েছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ তাদের বেহেশত নসিব করুন। ভাষা আন্দোলনে বৃহত্তর নোয়াখালীর একজন শহীদ সালাম এই এলাকার একজন ছিলেন। তাদের যে অবদান তা আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।
নোয়াখালী অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সক্রিয়ভাবে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারিতে মাইজদীতে কঠোর হরতাল পালন করা হয়েছিল। বাংলা ভাষার যে চেতনা তা যেন আমরা ধারণ করতে পারি সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন করতে পারি। আমাদের যে ভাষার জন্য অনেকে জীবন দিয়েছে সে ভাষা যদি আমরা শুদ্ধভাবে বলতে না পারি লিখতে না পারি সেটা বড় দুঃখের ব্যাপার।
বাংলার পাশাপাশি আমাদের আঞ্চলিক যে ভাষাগুলো আছে এগুলোকেও আমরা গুরুত্ব দেব।ভাষা নিয়ে অধিকতর গবেষণার জন্য আমারা ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাকে সর্বব্যাপি ছড়িয়ে দিতে আমরা সবাই চেষ্টা করবো।
উল্লেখ্য মহান ভাষা শহিদদের আত্নার মাগফিরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জুমার নামাজের পর মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন