হাসিনা সরকারের সব গুম-খুনের বিচার হবে: তারেক রহমান


শেখ হাসিনার আমলের সব গুম-খুনের বিচার হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, গুম-খুনের দায়ে শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিচার না হলে আবারও অন্যায়ের সুযোগ তৈরি হবে। দেশের জনগণ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সুযোগ দিলে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তারও বিচার করা হবে।
রোববার রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ উদ্যোগে ‘বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম, খুনের শিকার পরিবার ও ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ঈদ উপহার বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে, একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের প্রত্যাশা- সামনে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে কারা সরকার গঠন করবে, সেই সিদ্ধান্ত দেশের জনগণ দেবে। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামীদিনে যারা দেশে পরিচালনায় দায়িত্ব পাবে, এ দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব যে রাজনৈতিক দল পাক না কেন- তাদের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অবশ্যই একটি কর্মসূচি থাকতে হবে, সেটি হল যে মানুষগুলো এদেশের জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠার জন্য নির্যাতিত হয়েছে, যে পরিবারগুলো তাদের সদস্যদের হারিয়েছে- আগামীদিনে যে নির্বাচিত ও জনগণের সরকার থাকবে, তাদেরকে অবশ্যই এ অন্যায়গুলোর বিচার করতে হবে। যেকোনো মূল্যে সুষ্ঠুভাবে এ বিচার হতে হবে।
তিনি বলেন, আগামীদিনে আমরা যদি অন্যায়ের বিচারগুলো করতে না পারি, অন্যায়ের সুষ্ঠু বিচার যদি না হয়, হয়তো বা দেশে আবার অন্যায় সংগঠিত হতে পারে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ন্যায্য বিচার দেওয়ার মাধ্যমে সমগ্র দেশের কাছে এটি প্রতিষ্ঠিত করা খুবই জরুরি যে, অন্যায়কারী। যে অন্যায় করবে এবং ন্যায়ের বিরুদ্ধে যে যাবে, তাদেরকে অবশ্যই এদেশের আইন অনুযায়ী শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। আমাদের দলের অবস্থান থেকে আমরা এটি পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, বিএনপিকে যদি দেশের মানুষ আগামীদিনে দেশ পরিচালনায় সুযোগ দেয় তাহলে অবশ্যই যে রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো আছে, সেই কর্মসূচিগুলো পাশাপাশি অবশ্যই আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, বিগত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত ও নির্যাতিত হয়েছেন- একইসঙ্গে জুলাই-আগস্ট মাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, নির্যাতিত ও শহিদ হয়েছেন এবং বিভিন্নভাবে হত্যা করা হয়েছে- সেই হত্যাগুলোর বিচার আমরা করব, ইনশাআল্লাহ।
গুম ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে ইফতারে অংশ নেওয়া পরিবারগুলোর সদস্যদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, হারানোর মূল কারণ ছিল- এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করা। এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অধিকারও প্রতিষ্ঠিত করা। মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করা, যেটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর আমি এবং আমার ভাই (আরাফাত রহমান কোকো) আপনাদেরই (যারা গুম ও নির্যাতিত হয়েছেন) অংশ। আর যাদের ত্যাগ এবং আত্মত্যাগের কারণ হচ্ছে- আজকের আমাদের এ মুক্ত বাংলাদেশ। বিগত ১৬-১৭ বছর পরিবারগুলো বিভিন্নভাবে আত্মত্যাগ করেছেন, বিভিন্ন সদস্য নির্যাতিত হয়ে কিংবা সদস্যদের হারিয়েছেন। এখানে এমন ব্যক্তিও আছে যারা নিজেরা পর্যন্ত নির্যাতিত ও গুমের শিকার হয়েছেন।
‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সহসম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ প্রধান উপদেষ্টা মো. আবুল কাশেম, মোস্তফা জামান-ই সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, গুমের শিকার বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সহসম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শাম্মী আক্তার, ব্যারিস্টার মীর হেলাল ও বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়জী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন