কুড়িগ্রামে ভূমিদস্যুর পক্ষ নিয়ে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতির অভিযোগ, এসআই শওকতের বিরুদ্ধে

কুড়িগ্রামে ভূমিদস্যুর পক্ষ নিয়ে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতির অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রাম সদর থানার এসআই শওকতের বিরুদ্ধে।
ভূমিদস্যুর পক্ষ নিয়ে বিচারাধীন জমি পুলিশের উপস্থিতিতে দখলের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। স্থানীয়দের উপর পুলিশের এমন আক্রমণাত্মক আচরণ পুলিশের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। ঘটনাটি কুড়িগ্রাম শহরতলির কৃষ্ণপুর কুমারপাড়া এলাকার।
(১৮ মার্চ) মঙ্গলবার সকাল ১১টায় কুড়িগ্রাম শহরের কৃষ্ণপুর কুমারপাড়া গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের পুত্র রফিকুল ইসলামের বিচারাধীন পয়ষট্টি শতক জমি আরএস রেকর্ডবলে ক্রয়সূত্রে দখল করে এলাকার ভূমিদস্যু হিসেবে চিহ্নিত জাফর মাস্টার। তিনি তড়িঘরি করে উক্ত জমি পাশ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার আব্দুস সোবান নামের এক ব্যক্তির নিকট বিক্রি করে।
এ ঘটনায় পৈত্রিক সূত্রে জমির মালিকানা দাবিদার রফিকুল আরএস রেকর্ডের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। যার নং-৩৩২/২৩ইং। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জাফর মাস্টার দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত একদল ক্যাডার নিয়ে জমির দখল নিতে আসলে এলাকাবাসী তাদের ঘিরে ফেলে।
এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে জাফর মাস্টার এসআই শওকত আলীকে খবর দিলে পুলিশের ওই এসআই সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উল্টো এলাকাবাসীর উপর চড়াও হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে অদৃশ্য কারণে বিবদমান জমির দখল নিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠে এসআই শওকত। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা গলে তাদের সাথে চড়াও হন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
স্থানীয় বাসিন্দা ইছিরন খাতুন, জোসনা বেগম ও রনি জানান, ‘পুলিশ এসে অসহায় মানুষের পক্ষ না নিয়ে ভূমিদস্যু জাফরের পক্ষ নিয়ে আমাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। আমরা প্রতিবাদ করলে তারা এলাকাবাসীর উপর চড়াও হয়। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও পুলিশের এমন আক্রমণাত্মক আচরণ সত্যি হতাশাজনক।’
ক্রয়সূত্রে জমির মালিকানা দাবিদার মোঃ জাফর আলী বলেন, ‘আমি আরএস রেকর্ডমূলে জমি কিনেছি। আমার জমি অন্য একজনের নিকট বিক্রি করেছি। বিবাদী রফিকুল কোর্টের রায় পেলে আমি জমি ছেড়ে দিব। কিন্তু তিনি জমিতে নির্মাণ কাজ ঠেক দিতে পারেন না। কাজ ঠেক দেয়ার কারণে আমি পুলিশকে খবর দিয়েছি। পুলিশকে প্রবাহিত করি নাই।’
অভিযোগকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে শুধুমাত্র আরএস রেকর্ডের ক্ষমতাবলে জাফর মাস্টার আমার পৈত্রিক জমি অন্যের কাছে কিনে আবার তিনি তা উচ্চমূল্যে তড়িঘরি করে বিক্রি করেছেন। তারই দখল নিতে পুলিশ ভূমিদস্যু জাফর মাষ্টার কতৃক প্রভাবিত হয়ে গ্রামবাসীর কথা না শুনে একপেশে জাফর মাস্টারের পক্ষ নিয়ে আমাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলেছেন। আমি প্রতিকার চেয়ে রংপুর ডিআইজি মহোদয়সহ একাধিক জায়গায় অভিযোগ দিয়েছি। যা তদন্ত করলে পুরো ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে এসআই শওকতের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, ‘সাক্ষাতে আসেন কথা বলি। ফোনে কোন মন্তব্য করতে পারব না।’
এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাবিবুল্লাহ জানান, ‘স্থানীয়দের ভয়ভীতি প্রদর্শন করার কোন এখতিয়ার পুলিশের নাই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে বিবদমান জমির বিষয়টি মিমাংসার জন্য আমরা স্থানীয়দের উভয়পক্ষকে থানায় ডেকেছি।’
কুড়িগ্রাম পুলিশ মোঃ মাহফুজুর রহমানকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন