সু-প্রদীপ চাকমার রাঙামাটি আগমনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও কালো পতাকা প্রদর্শন

পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় কর্তৃক সাম্প্রদায়িক বৈষম্যমূলক বরাদ্দ দেওয়ায় রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য উপদেষ্টা সু-প্রদীপ চাকমা’র আগমনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচি পালন করেছে।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় রাঙামাটি জেলার বৈষম্য বিরোধী বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও কালো পতাকা প্রদর্শণ কর্মসূচি পালন করেছে।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচিতে ছাত্র প্রতিনিধি মোঃ শহিদুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজসেবক এবং ছাত্র উপদেষ্টা কামাল উদ্দিন, রেড জুলাই রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার যুগ্ম সদস্য সচিব মোঃ ইমাম হোসেন ইমু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা প্রতিনিধি সাইদা ইসলাম সাদিয়া, বড়ুয়া সমিতির প্রতিনিধি জনাব শ্যামল চৌধুরী বড়ুয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঐক্য পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা সমন্বয়ক পেয়ার আহমদ খান প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের প্রতি এক নজিরবিহীন বৈষম্য চালিয়ে সম্প্রতি যে চাকমা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করে পাহাড়ি-বাঙালি সকল জাতিগোষ্ঠীকে জনসংখ্যা অনুপাতে সমান ভাবে বরাদ্দের আওতায় আনতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাহাড়ের জনগণের সাথে বৈষম্য চালিয়ে সম্প্রতি যে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা সংবিধানের সাম্যের নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত সাম্প্রতিক বাজেট বরাদ্দ তালিকা পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয়, এই বরাদ্দ প্রক্রিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, পক্ষপাতদুষ্ট এবং এক বিশেষ জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রীভূত। রাষ্ট্রের সম্পদ কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য নয়, এটি সকল নাগরিকের সমান অধিকার। অথচ পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রদায়িক উপদেষ্টা সু-প্রদীপ চাকমা পাহাড়ি অঞ্চলের জনসংখ্যার প্রকৃত চিত্র ও প্রয়োজন উপেক্ষা করে একপাক্ষিক বরাদ্দ প্রদান করেছে, যা চরম বৈষম্যমূলক।

বিক্ষোভে পাহাড়ের সকল জাতিগোষ্ঠীরা জোর দাবি জানিয়ে বলেন, ১. পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের বৈষম্যমূলক সাম্প্রদায়িক চাকমা বরাদ্দ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে ২. বান্দরবানসহ সকল জেলার জন্য ন্যায্য বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে ৩. বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতালসহ সকল জনগোষ্ঠীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে ৪. একই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে একাধিকবার বরাদ্দ দেওয়ার অনৈতিক প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।

৫. জনসংখ্যার অনুপাতে ও প্রকৃত প্রয়োজনের ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদান করতে হবে ৬. উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এর সাইনবোর্ড ভেঙে সেখানে সংবিধান ও পার্বত্য চুক্তি বিরোধী শব্দ আদিবাসী লেখা ও বিভিন্ন স্কুলের সাইনবোর্ডে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী লেখা মুছে দিয়ে সেখানে আদিবাসী শব্দ যেসব উগ্র সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিরা লিখেছে তাদেরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে ৭. পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে ও চাঁদাবাজি বন্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে পার্বত্য মন্ত্রণালয় হতে কঠোর নির্দেশনা দিতে হবে।

সমাবেশে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়, এটি সকল জাতিগোষ্ঠীর আবাসভূমি। এখানে বরাদ্দের নামে কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ ছাত্র সমাজ মেনে নেবে না।

এই বৈষম্যমূলক বাজেট অবিলম্বে সংশোধন করা না হলে ও আদিবাসী শব্দ লেখা ও বলা ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।