খাগড়াছড়িতে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের বৈঠক বেস্তে গেছে। একমাত্র খাগড়াছড়ি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভুগোল বিষয়ের শিক্ষক মো: আব্দুল আউয়াল এর বিরুদ্ধে ২জন পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীরা একজন নবম শ্রেণির ও আরেকজন ৭ম শ্রেণির বলে জানা গেছে। তাদের সাথে অভিযুক্ত শিক্ষক দু’বার যৌন হয়রানিমূলক আচরণ(শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া, হাত ধরা ইত্যাদি) করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর মধ্যে গত ৩০শে জুলাই ২০২৫, ক্লাশ চলাকালীন ও তার আগে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। তবে শিক্ষক এ ঘটনা কাউকে না জানাতে বলায় ভয়ে তারা এতদিন ঘটনাটি জানায়নি।
পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা নিজের নিরাপত্তার দিক চিন্তা করে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ ও প্রধান শিক্ষককে ঘটনাটি জানান। এরপর ঘটনাটি বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদেরও জানানো হয়।
তবে অভিযোগ উঠার একদিন আগে শিক্ষক মো: আব্দুল আউয়াল ছুটিতে চলে যান।
কিন্তু আব্দুল আউয়াল ছুটি থেকে ফেরার পরও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোন উদ্যোগ না নিলে বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরে প্রশাসনকে জানানো হয়।
এরপর গত বুধবার(৬ই আগস্ট ২০২৫) এ নিয়ে বিদ্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।।
সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় যে, বিদ্যালয়ের মতো পবিত্র প্রতিষ্ঠানে দিন দিন শিক্ষার্থীদের সাথে যৌন হয়রানির মতো ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একজন শিক্ষক কখনো তার ছাত্রীদের সাথে যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করতে পারে না। একজনের অনৈতিক কর্মকাান্ডের কারণে বিদ্যালয়ের এবং শিক্ষকদের সুনাম ক্ষুন্ন হোক তা আমরা চাই না। এ বিষয়ে সকলকে সরব হওয়া এবং প্রতিটি বিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় কয়েকটি বিষয়ে উত্থাপন করা হয়। যেমন-অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল আউয়ালকে ৩দিনের মধ্যে বদলীর ব্যবস্থা করা ও বদলীর আগ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সকল কর্মকান্ড থেকে তাকে বিরত রাখা, শুধু বদলী নয়, প্রশাসনকে নিজ উদ্যোগে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা, অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে সামাজিকভাবে জুতার মালা পরিয়ে দিয়ে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়া।
তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা প্রধান শিক্ষক তিন দিনের মধ্যে তাকে বদলী করা সম্ভব হবে না জানিয়ে বলেছেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হবে। সেখান থেকে আদেশের ভিত্তিতে তাকে বদলী বা শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: আব্দুল বাতেন মৃধা ঘটনা স্বীকার করে বলেন, এই রকম অনাকাংখিত ঘটনা বার বার হওয়ার ফলে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। ঘটনার কেউ অভিযোগ দিলে সেটি আমলে নেওয়া হবে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন