খুলনায় সড়ক অবরোধ করে পাট শ্রমিকদের বিক্ষোভ

কাঁচা পাট রফতানিতে নতুন শর্ত আরোপের প্রতিবাদে খুলনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পাটশ্রমিকরা। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খুলনা-যশোর মহাসড়কের নতুন রাস্তা মোড়ে কয়েক শতাধিক শ্রমিক অবস্থান নেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধের কারণে দুপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।

শ্রমিকরা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রজ্ঞাপনে কাঁচা পাটকে শর্তযুক্ত পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় রফতানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। এতে খুলনা অঞ্চলের প্রায় ২৫টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে পড়বে এবং ৩০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন।

বক্তারা অভিযোগ করেন, “শর্ত মেনে রফতানি সম্ভব নয়। সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে কাঁচা পাট রফতানিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।” তারা অবিলম্বে কাঁচা পাটকে শর্তযুক্ত তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবি জানান।

বাংলাদেশ জুট প্রেস অ্যান্ড ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিঠু বলেন, “কাঁচা পাট রফতানি নিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে। এর অংশ হিসেবেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তযুক্ত পণ্যের তালিকায় কাঁচা পাট যোগ করেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আজকের কর্মসূচি কেবল সতর্কবার্তা। দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।”

অবরোধ কর্মসূচিতে অন্তত পাঁচ শতাধিক শ্রমিক অংশ নেন। হঠাৎ সড়ক অবরোধের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে ওঠে, অনেক যানবাহন বিকল্প পথে চলাচল করতে বাধ্য হয়। পাটশ্রমিকদের এই আন্দোলন শুধু একটি সড়ক অবরোধ নয় এটি হাজারো শ্রমিক পরিবারের টিকে থাকার সংগ্রাম।

সরকারের এক সিদ্ধান্তে যেমন রফতানি স্থবির হয়ে পড়ছে, তেমনি থমকে যাচ্ছে শ্রমিকদের জীবনের চাকা। শ্রমিকরা এখনও আশায় বুক বাঁধছেন তাদের আর্তনাদ পৌঁছে যাবে নীতিনির্ধারকদের কানে, ফিরবে জীবিকার নিশ্চয়তা।

উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা পাটকে শর্তযুক্ত পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর আগে গত ২৭ জুন ভারত সরকার স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচা পাট আমদানি নিষিদ্ধ করে। একের পর এক সিদ্ধান্তে খুলনা অঞ্চলে পাট রফতানি কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে, যা সরাসরি প্রভাব ফেলছে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের জীবিকায়।