ময়মনসিংহে প্রতিবন্ধীদের সাথে কৌশলগত আলোচনা

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ট্রাস্ট(বিডিডিটি) ও দৈনিক ঢাকা টাইমস যৌথভাবে বিভাগীয় শহরের দিগারকান্দা আসপাডা ট্রেনিং একাডেমিতে শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ জেলার শারিরীক, মানসিক, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কৌশলগত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

(১২ সেপ্টেম্বর) আলোচনার শুরুতে প্রকল্পের এসিস্টেন্ট তাসমিয়া জাহান ইকরা সার্বিক দিক নিদের্শনা মূলক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি এসএসকেগুলোর বাস্তব অবস্থা, সীমাবদ্ধতা ও সম্ভবনাকে নতুন আলোয় মাঠ পর্যায়ে সেবারমান, বাস্তবচিত্র তুলে ধরেন।এ সময় ময়মনসিংহ জেলার বিশজন প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

শারিরীক প্রতিবন্ধী কলেজ ছাত্রী রূপালী আক্তার বলেন সেন্টারগুলোতে সেবা নিতে গেলে মেডিকেল কলেজ থেকে টেস্ট করতে হয়, যা ব্যায়বহুল, এছাড়াও সেন্টারে নারী সেবিকা নেই, থেরাপী দিতে হলে পুরুষ সেবা দিয়ে থাকে যার ফলে অনেক নারী থেরাপী দিতে যায় না।

সেন্টারে নারী সেবিকা জরুরী বলে মনে করেন। আনন্দমোহন কলেজের মাস্টাস পড়ুয়া ছাত্র অজয় কৃষ্ণ দে বলেন ময়মনসিংহ জেলাতে সরকারী,বেসরকারী এমনকি কোন স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের রোম নেই, যার ফলে আমরা কোন অফিস বা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারিনা, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যাক্তি বয়োবৃদ্ধ সাইফুল ইসলাম বলেন সরকারী হাসপাতালে টিকিট করে চারঘন্টা অপেক্ষা করে সেবা নিতে হয়, আমাদেরকে তুচ্ছতাছিল্লভাবে আচরন করে স্টাফরা।

প্রতিবন্ধী হিসাবে আমাদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা, ট্রেন ভ্রমনের বা বাস ভ্রমনে আমাদের সেবার মান দিতে হবে। তিনি আরো বলেন প্রতিবন্ধীদের জন্য যদি সরকার একটি আলাদা হাসপাতাল করে দিতো তবে সকল প্রতিবন্ধী সেখানে চিকিৎসা নিতে পারতো।

শারিরীক প্রতিবন্ধী ছাত্রী মিলি আক্তার বলেন আমাদের জন্য পরীক্ষার হলে অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিট সময় দেওয়ার কথা কিন্তুু সেই সুযোগ আমরা পাইনা। এছাড়াও তানিয়া, হারুন,রফিকুল ইসলাম, লিলি আক্তার, সিজার আকন্দ, বিলকিস আক্তার, শান্ত, মো: এনায়েত হোসেন, এডভোকেট নাজমুল হক বক্তব্য রাখেন।

বক্তাগন বলেন আমরা প্রতিবন্ধী নির্বাচনের সময় কেন্দ্রে ভোট দিতে যেতে পারিনা। হুলইচেয়ার দিয়ে উঠার কোন ব্যাবস্থা নেই- দেশের কোন প্রতিষ্ঠানে বাসস্টেন, রেলস্টেশন, উপজেলা পরিষদে নির্বাহীর সাথে দেখা করতে পারিনা আমাদের সমস্যার কথাগুলো, কারন সেখানেও রেম নেই।

প্রতিবন্ধীদের যদি মোটিভেশন করা যেতো তবে তারা তাদের কাজ নিজেরটা নিজেই করতে পারতো। সেন্টারগুলোতে সেবার মান ভালো কিন্তুু ডিভাইস গুলো চাহিদা সম্পূর্ণ নয়। সেন্টারগুলোতে চাহিদা মত যন্ত্রপাতি নেই। কোন যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে মেরামতের ব্যাবস্থা নেই।

আল্লাহতায়ালা সকল প্রতিবন্ধীদের একটা না একটা ক্ষমতা দিয়েছেন, সেগুলো সনাক্ত করে চিকিৎসা করা হলে তারাও প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারবে। ১২ বছর বয়সে একজন হুইল চেয়ারের জন্য আবেদন করলো সে ১৪ বছর বয়সে চেয়ার পেলো, সেখানে সেই হুইল চেয়ারটি তার জন্য উপযুক্ত নয় কারন তার শারিরীক গঠনের পরিবর্তন ঘটে।

এসময় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী উনন্নয়ন ট্রাস্ট (বিডিডিটি) কনসালটেন্ট এডভোকেট রেজাউল করিম সিদ্দিকী, সিইও মনিরুজ্জামান খান, প্রজেক্ট এসিস্ট্যান্ট মো: মবিনুর রহমান, দৈনিক ঢাকা টাইমস ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি জয়নাল আবেদীন।